সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়ি মসূয়া গ্রামে, যা কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী উপজেলা থেকে মাত্র ৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এক সময় এটি ‘পূর্ব বাংলার জোড়াসাঁকো’ নামে পরিচিত ছিল। এই ঐতিহাসিক বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেছেন প্রখ্যাত শিশু সাহিত্যিক ও সঙ্গীতজ্ঞ উপেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরী এবং সুকুমার রায় চৌধুরী। যদিও সত্যজিৎ রায় কোনোদিন এই বাড়িতে আসেননি, তবে পারিবারিক ঐতিহ্য তাঁকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল এবং বাংলাদেশের প্রতি তাঁর গভীর টান ছিল।
পৈতৃক বাড়ির বিবরণ
বাড়ির ভেতরে রয়েছে কারুকার্যময় পুরাতন দালান, বাগানবাড়ি, হাতির পুকুর এবং খেলার মাঠ। পেছনে রয়েছে ছোট একটি পুকুর এবং প্রধান ফটকের বাইরে রয়েছে শান বাধানো একটি পুকুর ঘাট। এই বাড়ি বর্তমানে সরকারের রাজস্ব বিভাগের তত্ত্বাবধানে রয়েছে এবং চারপাশে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘেরা। বাড়ির দরবার ঘরটি বর্তমানে মসূয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ২০১২ সালে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন এই বাড়ির উন্নয়নে ৫৯ লাখ টাকা ব্যয়ে রেস্ট হাউজ নির্মাণ, সীমানা প্রাচীর এবং রাস্তাঘাট সংস্কারের কাজ সম্পন্ন করে।
কীভাবে যাবেন
সড়কপথে
ঢাকা থেকে কটিয়াদীর দূরত্ব প্রায় ৯০ কিলোমিটার। ভৈরব হয়ে কিশোরগঞ্জগামী যেকোনো বাসে করে কটিয়াদী পৌঁছানো যায়। বাসে যেতে সময় লাগে ২.৫ থেকে ৩ ঘণ্টা এবং ভাড়া ২০০-২৫০ টাকা। বাসগুলি মহাখালী বা গোলাপবাগ বাস স্ট্যান্ড থেকে ছাড়ে। ডে ট্রিপের জন্য প্রাইভেট কারেও যাওয়া সম্ভব।
রেলপথে
ঢাকা থেকে আন্তঃনগর ট্রেন যেমন এগারোসিন্দুর বা কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেসে চড়ে মানিকখালী স্টেশনে নামতে হবে। ভাড়া ১২৫-২৫৯ টাকা। মানিকখালী থেকে ইজিবাইক বা সিএনজিতে করে কটিয়াদী যেতে হবে। এরপর কটিয়াদী থেকে সিএনজি বা ইজিবাইকে ৭ কিলোমিটার দূরে মসূয়া গ্রামে পৌঁছানো যায়।
থাকা ও খাওয়া
মসূয়া গ্রামে থাকার জন্য একটি রেস্ট হাউজ থাকলেও এটি প্রায় বন্ধ অবস্থায় রয়েছে। থাকার জন্য কিশোরগঞ্জ শহরে যেতে হবে, যেখানে রিভার ভিউ, গাংচিল, নিরালা, উজানভাটি, ক্যাসেল সালাম নামের ভালো মানের হোটেল রয়েছে। মসূয়া গ্রামে খাবারের ভালো ব্যবস্থা না থাকলেও কটিয়াদী বাজারে কিছু সাধারণ মানের খাবারের হোটেল পাওয়া যায়।
আশেপাশে দেখার জায়গা
কিশোরগঞ্জ শহর ও তার আশেপাশে ঘুরে দেখা যেতে পারে নিচের স্থানগুলো:
- মুক্তমঞ্চ এবং ওয়াচ টাওয়ার
- ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ
- জঙ্গলবাড়ী: ঈশা খাঁর দ্বিতীয় রাজধানী
- ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ
- কবি চন্দ্রাবতীর শিবমন্দির
- গাঙ্গাটিয়া জমিদার বাড়ি
- নিকলি হাওর
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!