অষ্টগ্রাম হাওর কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলায় অবস্থিত। এটি কিশোরগঞ্জ জেলা সদর থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এর উত্তরে মিঠামইন ও ইটনা, দক্ষিণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর, পূর্বে হবিগঞ্জের লাখাই এবং পশ্চিমে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর ও নিকলি উপজেলা অবস্থিত। অষ্টগ্রাম হাওর মূলত হাওরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থান করছে।
কখন যাবেন অষ্টগ্রাম হাওরে?
বর্ষাকাল অষ্টগ্রাম হাওর ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। এসময় চারপাশে শুধু পানি আর পানি। পানির মাঝে ছোট ছোট গ্রামগুলো যেন ভেসে থাকা ছবির মতো। উত্তাল বাতাস, মাঝিদের গান, জেলেদের কর্মব্যস্ততা এবং নৌকার চলাচল—সবকিছু মিলিয়ে এখানকার পরিবেশ অনন্য। শীতকালে পানি কমে গেলে হাওরের ভিন্ন সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা যেতে পারে।
কিভাবে যাবেন অষ্টগ্রাম?
অষ্টগ্রাম যেতে হলে বিভিন্ন উপায়ে যেতে হবে। বর্ষাকাল ও শীতকালে যাওয়ার পদ্ধতিতে পার্থক্য রয়েছে। প্রধানত চারটি পথ রয়েছে:
- কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর থেকে নৌকায়।
- বাজিতপুর থেকে নৌকায়।
- মিঠামইন হয়ে সড়কপথে।
- নিকলি হয়ে নৌকায় বা সড়কপথে।
জনপ্রিয় রুট: ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জের ট্রেনে বাজিতপুর নেমে দীঘিরপাড় ঘাটে যান। শুকনো মৌসুমে ইজিবাইকে এবং বর্ষাকালে নৌকা রিজার্ভ করে অষ্টগ্রাম যাওয়া সম্ভব। এছাড়া বাসে গেলে কটিয়াদি থেকে সিএনজিতে বাজিতপুর হয়ে যাওয়া যায়।
অষ্টগ্রামে যা দেখবেন
- হাওরের নৈসর্গিক সৌন্দর্য: নৌকায় ঘুরে হাওরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।
- কুতুবশাহ মসজিদ: প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো এই মসজিদটি সুলতানি ও মোগল স্থাপত্যের মিশ্রণে তৈরি।
- পূর্ণিমার রাতে হাওর: ভরা পূর্ণিমায় হাওরে নৌকায় সময় কাটানো স্মরণীয় হতে পারে। চাইলে ক্যাম্পিংও করতে পারেন, তবে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সঙ্গে আনতে হবে।
থাকার ব্যবস্থা
অষ্টগ্রামে থাকার জন্য সাধারণ মানের হোটেল রয়েছে:
- রংধনু আবাসিক হোটেল
- মৌ-মিতু আবাসিক
- ঝলক আবাসিক হোটেল
ভাড়া: ১৫০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত।
ডাক বাংলোয় থাকতে হলে আগে থেকে যোগাযোগ করতে হবে (ফোন: ০১৭১-০২৯১২২৫ / ০১৯১৪-৯৭৫৩৮৯)।
খাওয়ার ব্যবস্থা
অষ্টগ্রামে তাজা মাছের বিভিন্ন পদ পাওয়া যায়। নাজির বা প্রভাতি হোটেলে খাবারের ব্যবস্থা করতে পারেন। এখানকার বিখ্যাত পনির ও শীতকালের মুরালি মাছের স্বাদ নিতে ভুলবেন না। পনির অর্ডারের জন্য আগেই স্থানীয় বিক্রেতাদের সাথে যোগাযোগ করা উচিত।
সতর্কতা
- ক্যাম্পিং করলে নিরাপদ জায়গা বেছে নিন।
- বড় দলের ক্ষেত্রে স্থানীয় থানায় রিপোর্ট করতে হতে পারে।
- নৌকায় রাতে থাকলে স্থানীয় কাউকে সঙ্গে রাখা ভালো।
অষ্টগ্রামের এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে একবার হলেও ভ্রমণ করে আসুন এবং প্রকৃতির একান্ত নিবিড় সান্নিধ্যে হারিয়ে যান।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!