বান্দরবান জেলার কেওক্রাডং পাহাড়ের কাছাকাছি, মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে, অবস্থিত জাদিপাই ঝর্ণা (Jadipai Waterfall)। এটি বাংলাদেশের অন্যতম প্রশস্ত জলপ্রপাত। কেওক্রাডং, জংছিয়া, ও জাদিপাই পাহাড়ের স্বচ্ছ ঝিরিপথ একত্রিত হয়ে প্রায় ২০০ ফুট উচ্চতা থেকে কালো পাথরের বুক চিরে সাংঙ্গু নদীতে মিশেছে। চারপাশে সবুজে ঘেরা পাহাড় আর নির্জন প্রকৃতির মাদকতা মিলে জাদিপাইকে বান্দরবানের ঝর্ণার রানী বলে মনে হয়।
কখন যাবেন
জাদিপাই ঝর্ণায় আপনি বছরের যে কোনো সময়ে যেতে পারেন। তবে শীতকালে পানির প্রবাহ কম থাকলেও ট্রেকিং সহজ হয়। বর্ষাকালে ঝর্ণা পূর্ণ সজীব হয়ে ওঠে, তবে পথ কিছুটা বিপজ্জনক হতে পারে। বর্ষা শেষে বা শরৎকালে ঝর্ণার আসল সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।
কিভাবে যাবেন
জাদিপাই ঝর্ণায় পৌঁছাতে হলে আপনাকে বান্দরবানের রুমা উপজেলা থেকে বগালেক হয়ে কেওক্রাডং পাহাড় পার হতে হবে। বান্দরবান শহর থেকে রুমা বাজারের দূরত্ব প্রায় ৪৮ কিলোমিটার। লোকাল বাস বা চাঁন্দের গাড়িতে রুমা বাজারে পৌঁছাতে পারেন। চাইলে সরাসরি গাড়ি রিজার্ভ করে বগালেক পর্যন্ত যাওয়া যায়।
বগালেক থেকে ট্রেকিং করে কেওক্রাডং পৌঁছাতে হয়। সেখান থেকে ১৫-২০ মিনিট হাঁটলে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ গ্রাম পাসিং পাড়া। খাড়া পথ পেরিয়ে আরও ৩০-৪০ মিনিট হাঁটলে পৌঁছানো যায় জাদিপাই ঝর্ণায়। তবে পাসিং পাড়া থেকে জাদিপাই যাওয়ার পথ কিছুটা কঠিন ও বিপদজনক, তাই সতর্ক থাকতে হবে।
খাওয়া-দাওয়া
বগালেক ও কেওক্রাডং এলাকার আদিবাসীদের ছোট ছোট কটেজে সাধারণ খাবারের ব্যবস্থা থাকে। সাধারণত ভাত, ভর্তা, মাংস, ডালের প্যাকেজের দাম ১০০-২০০ টাকার মধ্যে। ট্রেকিংয়ের জন্য শুকনো খাবার সঙ্গে রাখাই ভালো।
কোথায় থাকবেন
রাতযাপনের জন্য বগালেক বা কেওক্রাডং-এ আদিবাসীদের কটেজে থাকতে পারেন। এগুলো সাধারণ হলেও পাহাড়ি পরিবেশে থাকার অন্যরকম অভিজ্ঞতা দেয়। কোথায় থাকবেন, সে বিষয়ে গাইডের সঙ্গে আলোচনা করলেই ভালো হয়।
জাদিপাই ঝর্ণার মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য আর পাহাড়ি ট্রেকিংয়ের অ্যাডভেঞ্চার একবার অনুভব করলে, বারবার ফিরে যেতে ইচ্ছে করবে!
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!