সিরাজগঞ্জ জেলার অন্যতম প্রধান বিনোদন কেন্দ্র বঙ্গবন্ধু যমুনা ইকোপার্ক (Bangabandhu Jamuna Eco Park)। ২০০৭ সালে বন বিভাগ এই পার্কটি গড়ে তোলে, যা প্রায় ১২০ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। এটি বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাশে অবস্থিত, যেখানে সবুজ প্রকৃতির সান্নিধ্যে যমুনা নদী ও সেতুর মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করা যায়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এ পার্ক ধীরে ধীরে পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণে পরিণত হয়েছে।
প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য ও জীববৈচিত্র্য
পার্কের ভেতরে বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ, বনজ ও ঔষধি গাছ রয়েছে। এখানে আম, পেয়ারা, আমলকি, ডেউয়া, জাম, তেঁতুল, জলপাই, শিমুল, মহুয়া, অর্জুনসহ অসংখ্য গাছের সমারোহ রয়েছে। সবুজের মাঝে প্রাণিজগতেরও দেখা মেলে—কাঠবিড়ালি, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, হরিণ, ময়ুর, সাজারু, খরগোশ এবং বানরের দেখা পাওয়া যায়। প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এটি এক অনন্য স্থান।
খোলা-বন্ধের সময়সূচি
প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত পার্কটি খোলা থাকে। প্রবেশের জন্য মেইন গেট থেকে টিকিট সংগ্রহ করতে হয়।
যেভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে সিরাজগঞ্জ যেতে বাস এবং ট্রেন উভয় মাধ্যমেই যাওয়া যায়।
- বাস: মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে অভি ক্লাসিক ও এসআই পরিবহনের নন-এসি বাস চলাচল করে। এছাড়া মিরপুর-২ থেকে ঢাকা লাইন ও এসআই পরিবহনের এসি বাস পাওয়া যায়। এসি বা নন-এসি বাসের ভাড়া ৫০০ থেকে ১৩০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
- ট্রেন: উত্তরবঙ্গগামী যেকোনো ট্রেনে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম প্রান্তে নেমে সহজেই ইকোপার্কে পৌঁছানো যায়।
- সিরাজগঞ্জ শহর থেকে: প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরত্ব হওয়ায় বাস কিংবা রিকশায় সহজেই যাওয়া সম্ভব।
কোথায় থাকবেন?
একদিনে ঢাকা থেকে পার্ক ঘুরে ফিরে আসা সম্ভব হলেও, প্রয়োজনে সিরাজগঞ্জ শহরে রাত্রিযাপন করা যায়।
- হোটেল আলিশান
- হোটেল অনিক
এই হোটেলগুলোতে প্রতি রাতের খরচ ৮০০ থেকে ১৫০০ টাকার মধ্যে হতে পারে।
খাবারের ব্যবস্থা
সিরাজগঞ্জ শহরে বেশ কয়েকটি ভালো মানের খাবারের রেস্টুরেন্ট রয়েছে, যেখানে পর্যটকরা খাবার খেতে পারেন।
- ফুড ভিলেজ
- বসুন্ধরা রেস্টুরেন্ট
এছাড়া, সিরাজগঞ্জে থাকলে অবশ্যই বগুড়ার বিখ্যাত দই চেখে দেখতে ভুলবেন না!
আশপাশের দর্শনীয় স্থান
যদি সময় হাতে থাকে, তাহলে পার্কের পাশাপাশি সিরাজগঞ্জের আরও কিছু আকর্ষণীয় স্থান ঘুরে দেখতে পারেন:
- চায়না বাঁধ
- বড় পুল
- ক্লোজার
- নবরত্ন মন্দির (হাটিকুমরুল)
বঙ্গবন্ধু যমুনা ইকোপার্ক প্রকৃতির সান্নিধ্যে দিন কাটানোর জন্য একটি দারুণ গন্তব্য। আপনি যদি নির্জন, সবুজ ও মনোরম পরিবেশে সময় কাটাতে চান, তাহলে অবশ্যই এখানে একবার ঘুরে আসতে পারেন!
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!