প্রায় চারশো বছর আগে, লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জে জমিদার মুরারিদেব ঘোষাল ভট্টাচার্য তুষভান্ডার জমিদার বাড়ি প্রতিষ্ঠা করেন। জানা যায়, ১৬৩৪ সালে মহারাজা প্রাণ নারায়ণের শাসনামলে মুরারিদেব ঘোষাল ভট্টাচার্য চব্বিশ পরগনা থেকে কোচবিহারে আসেন, ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার অংশ হিসেবে। মহারাজা তাকে বিগ্রহ পূজার জন্য ৯টি মৌজা ভূমি দান করেন। তবে ঘোষাল ভট্টাচার্য ব্রাহ্মণ হওয়ায় তিনি বিনামূল্যে সম্পত্তি গ্রহণে আপত্তি জানান। রাজা তখন খাজনা হিসেবে ধানের তুষ গ্রহণের প্রস্তাব দেন। জমিদার বাড়ির পাশে সেই ধানের তুষ জমা করা হত, আর সেখান থেকেই নাম হয় তুষভান্ডার জমিদার বাড়ি।
পরবর্তীতে, এই বংশের জমিদার কালী প্রসাদ রায় চৌধুরীর নামেই কালীগঞ্জ উপজেলার নামকরণ করা হয়। জমিদার গীরিন্দ্র মোহন রায় চৌধুরীর মৃত্যু (১৯৩৫) দিয়ে তুষভান্ডার জমিদারি শাসনামলের সমাপ্তি ঘটে।
যেভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে লালমনিরহাটে যেতে পারেন বাস কিংবা ট্রেনে। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে:
- লালমনি এক্সপ্রেস: প্রতিদিন রাত ৯:৪৫ (শুক্রবার বন্ধ)
- বুড়িমারী এক্সপ্রেস: প্রতিদিন সকাল ৮:৩০ (মঙ্গলবার বন্ধ)
ট্রেনে টিকিটের দাম আসনভেদে ৬৩৫-২১৮০ টাকা। এছাড়া গাবতলী ও কল্যাণপুর থেকে হানিফ ও শাহ আলী পরিবহন সরাসরি লালমনিরহাটে যায়। লালমনিরহাট শহর থেকে তুষভান্ডার জমিদার বাড়ি প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে, যা স্থানীয় পরিবহনে সহজেই পৌঁছানো যায়।
কোথায় থাকবেন
কালীগঞ্জে সাধারণ মানের আবাসিক হোটেল থাকলেও, লালমনিরহাট শহরে কিছু ভালো মানের হোটেল পাবেন:
- খান হোটেল
- হোটেল সীমান্ত আবাসিক
- হোটেল অতিথি
- হোটেল অবসর
- হোটেল মাসুদ
- উত্তরা হোটেল
কোথায় খাবেন
লালমনিরহাটে বেশকিছু মানসম্মত খাবারের জায়গা রয়েছে:
- প্যারাডাইস রেস্টুরেন্ট
- সীমান্ত ক্যান্টিন
- পলাশী
- পালকি
- নিউ শান্তি হোটেল
- মুক্তিযোদ্ধা হোটেল
তুষভান্ডার জমিদার বাড়ি ইতিহাস, সংস্কৃতি আর স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন। এই জায়গার গল্প যেন অতীতের দরজা খুলে দেয়!
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!