মনপুরা দ্বীপ

মনপুরা দ্বীপ বাংলাদেশের ভোলা জেলার একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ। এই দ্বীপের পূর্ব, পশ্চিম ও উত্তর দিকে মেঘনা নদী প্রবাহিত, আর দক্ষিণে রয়েছে বঙ্গোপসাগর। মনপুরা দ্বীপে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার একটি বিরল সুযোগ রয়েছে। এখানে হরিণের অভয়াশ্রম, মনপুরা ল্যান্ডিং স্টেশন এবং চৌধুরী প্রজেক্ট নামে একটি মাছের ঘেরও আছে। মেঘনা নদীর ৫০০ মিটার ভেতরে মনপুরা ল্যান্ডিং স্টেশনটি অবস্থিত।

দ্বীপের হরিণ অভয়াশ্রমের হরিণগুলো জোয়ারের সময় প্রধান সড়কের কাছাকাছি চলে আসে। মাঝে মাঝে হরিণের পাল রাস্তা পার হতে দেখে বাইক থামিয়ে অপেক্ষা করতে হয়। এছাড়া, চৌধুরী প্রজেক্ট নামে বিশাল এলাকাজুড়ে মাছের ঘের ও নারিকেল গাছের সারি মনপুরা দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে তোলে। এখানকার পুকুর ও লেকের পাড়ে বিকেল কাটানো খুবই আনন্দদায়ক।

মনপুরা দ্বীপ সাইক্লিং এবং ক্যাম্পিংয়ের জন্য একটি আদর্শ স্থান। সাইকেল চালিয়ে নদী ও সবুজ প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যাওয়ার অনুভূতি সত্যিই রোমাঞ্চকর।

মনপুরা দ্বীপ ভ্রমণের সেরা সময়

শীতকাল মনপুরা দ্বীপ ভ্রমণের সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। এই সময়ে ক্যাম্পিং করে থাকার মজাই আলাদা।

যাতায়াত ব্যবস্থা

মনপুরা দ্বীপে যাওয়ার একমাত্র বাহন হলো লঞ্চ। ঢাকার সদরঘাট থেকে এমভি ফারহান-৩ এবং ৪ নামে দুটি লঞ্চ প্রতিদিন বিকাল ৫টায় হাতিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় এবং সকাল ৭টা থেকে ৭টা ৩০ মিনিটের মধ্যে মনপুরা দ্বীপে পৌঁছায়। লঞ্চের ডেকে সূর্যোদয় দেখার মোহনীয় দৃশ্য উপভোগ করা যায়। লঞ্চের ডেক চড়তে জনপ্রতি ৩৫০ টাকা ভাড়া লাগে। মনপুরা রামনেওয়াজ লঞ্চঘাট থেকে দুপুর ২টায় লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।

এছাড়া, ঢাকা বা বরিশাল থেকে ভোলা হয়ে তজুমদ্দিন ঘাটে এসে সি-ট্রাকে করেও মনপুরা দ্বীপে যাওয়া যায়। তজুমদ্দিন থেকে প্রতিদিন বিকাল ৩টায় সি-ট্রাক ছাড়ে এবং মনপুরা থেকে সকাল ১০টায় ফিরে আসে। ভোলার চরফ্যাশনের বেতুয়া ঘাট থেকেও দুটি লঞ্চ মনপুরার জনতা বাজারের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। তবে এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এই নৌপথটি বিপজ্জনক হিসেবে বিবেচিত হয়, তাই এই সময়ে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকে।

রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা

মনপুরা দ্বীপে রাত্রি যাপনের জন্য সরকারি ডাকবাংলো, কারিতাস বাংলো এবং প্রেসক্লাব বাংলো নামে তিনটি বাংলো রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় এই বাংলোগুলোতে থাকা যায়। অনেক পর্যটক ক্যাম্পিং করে থাকার জন্যও মনপুরা ভ্রমণ করে।

মনপুরায় খাওয়া-দাওয়া

শীতকালে হাঁসের মাংস ভুনা মনপুরা দ্বীপের একটি জনপ্রিয় খাবার। এছাড়া মহিষের দুধের দই, নদীর টাটকা ইলিশ, বোয়াল, কোরাল এবং গলদা চিংড়ির স্বাদ নেওয়া যায়।

মনপুরা দ্বীপ এর দূরত্ব
ঢাকা থেকে দূরত্ব:
183.51 কিমি
ভোলা থেকে
59.28 কিমি
নিকটবর্তী দর্শনীয় স্থান
নিঝুম দ্বীপ
জ্যাকব টাওয়ার
তালুকদার বাড়ী
সোনারচর
চর কুকরি মুকরি
স্বাধীনতা জাদুঘর
চর আলেকজান্ডার
কানাই বলাই দিঘী

মন্তব্য

এখনো কোনো মন্তব্য নেই

প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!

আপনার মন্তব্য লিখুন