মেহেরপুর জেলার সদর উপজেলার কাছেই অবস্থিত ঐতিহাসিক শ্রী শ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির, যা স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে কেন্দ্রীয় উপাসনালয় হিসেবে পরিচিত। এই মন্দিরটি বড় বাজার এলাকায় অবস্থিত এবং এটি বহু প্রাচীন সময় থেকে পূজার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গড়ে উঠেছে।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন, পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের সহযোগীরা মন্দিরটি আক্রমণ করে এবং ভিতরে থাকা বালা দেবীর বিগ্রহটি ধ্বংস করে দেয়। স্বাধীনতা লাভের পর, স্থানীয় হিন্দু জনগণ মন্দিরটি পুনরায় সংস্কার করে এবং নতুন করে প্রতিমা স্থাপন করে পূজা-অর্চনা চালু করেন।
এখানে প্রতিবছর কালীপূজা, দুর্গাপূজা ও সরস্বতী পূজাসহ নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠান উদযাপিত হয়। বিশেষ করে বৈশাখ মাসের শেষ দিকে আয়োজিত বৈশাখ সংক্রান্তির মেলা ভক্ত ও দর্শনার্থীদের ভিড়ে মুখরিত থাকে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এই সময় মেলায় অংশ নিতে আসেন।
যেভাবে যেতে পারেন
ঢাকা থেকে সরাসরি সড়কপথে পদ্মা সেতু অতিক্রম করে মেহেরপুরে যাওয়া যায়। গাবতলী ও কল্যাণপুর থেকে JR পরিবহন, রয়েল, SM, মেহেরপুর ডিলাক্স, চুয়াডাঙ্গা এক্সপ্রেস, SB পরিবহন এবং শ্যামলী পরিবহনের এসি ও নন-এসি বাস পাওয়া যায়।
নন-এসি বাস ভাড়া সাধারণত ৬০০-৭০০ টাকা এবং এসি বাসের ভাড়া ৮০০-১৩০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে।
এছাড়াও পাটুরিয়া ফেরিঘাট হয়ে ফরিদপুর, রাজবাড়ি বা চুয়াডাঙ্গা হয়ে মেহেরপুর পৌঁছানো সম্ভব। মেহেরপুর শহরের জিরো পয়েন্ট থেকে পায়ে হেঁটে মন্দিরে যাওয়া যায়।
থাকার ব্যবস্থা
মেহেরপুর শহরের বড় বাজার ও বাস স্ট্যান্ড রোড এলাকায় বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেল রয়েছে। এর মধ্যে হোটেল নাইট বিলাস, হোটেল অনাবিল, প্রিন্স আবাসিক, ফিন টাওয়ার এবং রনি আবাসিক হোটেল বেশ পরিচিত।
এছাড়াও সরকারি অনুমতি সাপেক্ষে পর্যটন মোটেল, সার্কিট হাউজ, গণপূর্ত রেস্ট হাউজ এবং জেলা পরিষদের ডাক বাংলোতেও রাত্রিযাপন সম্ভব।
খাওয়ার জায়গা
মেহেরপুর সদর এলাকায় অবস্থিত কুটুমবাড়ি রেস্টুরেন্ট, ক্যাফে ইন, গালিবস-এ সুলভ মূল্যে মানসম্মত খাবার পরিবেশন করা হয়।
এছাড়া এখানকার জনপ্রিয় মিষ্টির মধ্যে সাবিত্রী ও রসকদম্ব বেশ খ্যাতনামা। আর আমের মৌসুমে এখানে উৎপাদিত সুস্বাদু পাকা আম না খেলে যেন সফরটাই অপূর্ণ থেকে যায়!
আশেপাশের দর্শনীয় স্থান
মেহেরপুর জেলার আরও কিছু আকর্ষণীয় ভ্রমণস্থানের মধ্যে রয়েছে:
- আমদহ গ্রামের প্রাচীন স্থাপত্য
- আমঝুপি নীলকুঠি
- ডিসি ইকোপার্ক
- মুজিবনগর স্মৃতি কমপ্লেক্স
এসব স্থান ঘুরে দেখতে চাইলে, সহজেই এক বা দুই দিনের সফরে সবকিছু উপভোগ করা সম্ভব।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!