কক্সবাজারের মহেশখালি উপজেলার মাত্র ৯ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের সোনাদিয়া দ্বীপ ক্যাম্পিংয়ের জন্য আদর্শ স্থান। একটি খাল মহেশখালি থেকে সোনাদিয়া দ্বীপকে আলাদা করে রেখেছে। তিন দিকেই রয়েছে সমুদ্র সৈকত, জীব বৈচিত্র্যে ভরপুর জলাবন, প্যারাবন, সাগরলতায় ঢাকা বালিয়াড়ি এবং নানা ধরনের জলচর পাখির উপস্থিতি। প্রায় ১০০ থেকে ১২৫ বছর আগে এখানে মানব বসতি গড়ে উঠেছে। জীব বৈচিত্র্যের অপূর্ব সমন্বয় দেখতে প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক এই ছোট্ট দ্বীপে ভিড় করেন।
সোনাদিয়া দ্বীপে কিভাবে যাবেন
সোনাদিয়া দ্বীপে যেতে হলে প্রথমে দেশের যেকোনো স্থান থেকে কক্সবাজার পৌঁছাতে হবে। এরপর কক্সবাজার কস্তুরী ঘাট বা ৬ নম্বর জেটি ঘাট থেকে জনপ্রতি ৮০ টাকার বিনিময়ে স্পিডবোটে করে মহেশখালী যেতে পারেন। মহেশখালী পৌঁছাতে সময় লাগবে ২০-২৫ মিনিট। সেখান থেকে রিকশায় (২০-২৫ টাকা) গোরকঘাটা বাজারে যেতে হবে। এরপর সিএনজিতে ২৪ কিলোমিটার দূরত্বের ঘটিভাঙা যেতে খরচ হবে ১৫০-১৮০ টাকা।
ঘটিভাঙা থেকে সোনাদিয়া দ্বীপে যেতে ইঞ্জিনচালিত নৌকার ব্যবস্থা রয়েছে। খেয়া নৌকায় সোনাদিয়া চ্যানেল পার হয়ে দ্বীপে যাওয়া যায়। প্রতিদিন জোয়ারের সময় মাত্র একটি ট্রলার পশ্চিম সোনাদিয়া থেকে ঘটিভাঙা পর্যন্ত যাত্রী পরিবহন করে। এই যাত্রার ভাড়া জনপ্রতি ২৫ টাকা।
বিশেষভাবে মনে রাখুন, প্রতিদিন মাত্র একটি ট্রলার চলাচল করে এবং এটি জোয়ার ভাটার সময়ের উপর নির্ভরশীল। সাধারণত সকাল ১০টার আশপাশে ট্রলার ছাড়ে।
পায়ে হেঁটে সোনাদিয়া দ্বীপের পূর্ব পাড়ায় যাওয়া সম্ভব হলেও এটি বেশ কষ্টকর এবং পূর্ব পাড়ায় থাকার কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই পশ্চিম পাড়ার মাধ্যমেই যাতায়াত করা উত্তম। চাইলে কক্সবাজার থেকে সরাসরি স্পিডবোট রিজার্ভ করেও সোনাদিয়া যেতে পারেন। তবে এতে বেশি খরচ হবে।
থাকা ও খাওয়া
সোনাদিয়া দ্বীপে পর্যটকদের জন্য তেমন কোনো থাকার বা খাওয়ার ব্যবস্থা নেই। স্থানীয় বাসিন্দাদের সাহায্যে টাকা দিয়ে থাকা এবং খাওয়ার ব্যবস্থা করতে হয়। বন বিভাগের অফিসে থাকার সুযোগ থাকলেও এর জন্য কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে।
যদি একদিনের মধ্যে ফিরে আসার পরিকল্পনা করেন, তবে দ্বীপের সকালের অসাধারণ সৌন্দর্য উপভোগ থেকে বঞ্চিত হবেন। সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের অপূর্ব দৃশ্য সোনাদিয়াকে বাংলাদেশের মধ্যে অনন্য করে তুলেছে। তাই কমপক্ষে দুই দিনের পরিকল্পনা নিয়ে সোনাদিয়া ও মহেশখালীর দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে দেখাই উত্তম।
নিরাপত্তা ও সতর্কতা
ক্যাম্পিংয়ের জন্য সোনাদিয়া দ্বীপের পশ্চিম পাড়া সম্পূর্ণ নিরাপদ। পূর্ব পাড়া এড়িয়ে চলাই ভালো। প্রয়োজনে স্থানীয়দের সাহায্য নিতে দ্বিধা করবেন না।
Rony Ahmed
ভ্রমণকারীবাংলাদেশের অন্যতম একটি স্থান, সোনাদিয়া দ্বীপ