কক্সবাজার থেকে ২৩ কিলোমিটার এবং হিমছড়ি থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ইনানী সমুদ্র সৈকত। ভাটার সময়, এখানে সেন্টমার্টিনের মতো প্রবাল পাথরের দেখা মেলে। কক্সবাজারের মত সাগর এখানে উত্তাল থাকে না, আর এই শান্ত সাগরই পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। সাধারণত বিকেল বেলা ইনানী সৈকত ভ্রমণের জন্য আদর্শ সময়। বিকেলে পর্যটকরা কম থাকেন এবং অপূর্ব সূর্যাস্ত দেখার সুযোগ হাতছাড়া করা আফসোসের কারণ হতে পারে। এছাড়া, টেকনাফ গামী মেরিন ড্রাইভ রোড দিয়ে ইনানী সৈকতে যাওয়ার সময় হিমছড়ির পাহাড়, সাম্পান, নারিকেল ও ঝাউবন গাছের সারি আর চারপাশের প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখে আপনি পুরো ভ্রমণের ক্লান্তি দূর করবেন।
ইনানী কিভাবে যাবেন
প্রথমে ঢাকা থেকে কক্সবাজার আসতে হবে। কক্সবাজার আসার জন্য অনেক ধরণের এসি-নন এসি বাস সার্ভিস আছে, যেমন সৗদিয়া, এস আলম মার্সিডিজ বেঞ্জ, গ্রিন লাইন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী পরিবহন ইত্যাদি। বাসের ভাড়া ৯০০ থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়া, ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজার এক্সপ্রেস বা পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনে করে যেতে পারেন। বিমান পথে গেলে, নির্ধারিত সময় ও বিমানের ক্লাস অনুযায়ী ভাড়া ৪৬০০ থেকে ১২,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
কক্সবাজার থেকে ইনানী সৈকত যাওয়ার জন্য খোলা জীপ পাওয়া যায়। রিজার্ভ করলে বেশি টাকা লাগে, তবে আলোচনা সাপেক্ষে ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকায় যাওয়া যায়। এছাড়া, অটোরিকশা/ইজিবাইক দিয়ে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায় যেতে পারবেন। লোকাল সিএনজি দিয়ে জনপ্রতি ৮০ টাকায় ইনানী সৈকত যেতে পারেন।
কোথায় থাকবেন
ইনানী সৈকতের আশেপাশে কিছু হোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে, যেমন রয়েল ফাইভ স্টার টিউলিপ সী পার্ল রিসোর্ট, ইনানী রয়াল রিসোর্ট, লা বেল্যা রিসোর্ট। তবে, কক্সবাজারে অনেক হোটেল থাকায় সেখানে থাকা সবচেয়ে সুবিধাজনক। কক্সবাজারে হোটেল/মোটেল/রিসোর্ট সাধারণত তিন ভাগে বিভক্ত:
১. ৬০০০-১০,০০০ টাকা: মারমেইড বিচ রিসোর্ট, সায়মন বিচ রিসোর্ট, ওয়াশেন প্যারাডাইস, লং বিচ ইত্যাদি।
২. ৩,০০০-৬,০০০ টাকা: সী প্যালেস, সী গাল, কোরাল রিফ, নিটোল রিসোর্ট ইত্যাদি।
৩. ৮০০-৩,০০০ টাকা: উর্মি গেস্ট হাউজ, কোরাল রিফ, ইকরা বিচ রিসোর্ট ইত্যাদি।
তবে, অফসিজনে হোটেলের ভাড়া কম হয়ে থাকে। রিকশা বা সিএনজির মাধ্যমে হোটেল খোঁজার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন, কেননা তাদের পরামর্শের উপর নির্ভর করা উচিত নয়।
কোথায় কি খাবেন
ইনানী সৈকত থেকে ৫-৬ ঘণ্টার মধ্যে ফিরে আসা যায়, তাই খেতে চাইলে কক্সবাজারে ফিরে খেতে পারেন। কক্সবাজারে রোদেলা, ঝাউবন, ধানসিঁড়ি, পৌষি, নিরিবিলি ইত্যাদি মাঝারি মানের রেস্টুরেন্ট রয়েছে।
ইনানী সৈকত ভ্রমণ টিপস:
- অফসিজনে বা ছুটির দিন গুলো পরিহার করলে খরচ কম হবে।
- হোটেলে থাকা জন্য বিচ থেকে দূরে লাবনী পয়েন্টের হোটেলগুলোতে থাকতে পারেন।
- যাতায়াত ও খাওয়া-দাওয়ার জন্য দরদাম করে নেবেন।
- বিকেলে ইনানী সৈকত ভ্রমণ করা উপযুক্ত।
- মেরিন ড্রাইভ ও হিমছড়ি ভ্রমণ করার জন্য সময় নিয়ে বের হোন।
- সিজনে (ডিসেম্বর-মার্চ) হোটেল বুকিংয়ের প্রয়োজন হতে পারে না।
- রিকশাওয়ালা বা ইজিবাইক চালকদের পরিহার করুন।
- সৈকতে নামার সময় সতর্ক থাকুন, বিশেষত জোয়ার-ভাটার সময়।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!