সীতাকুন্ডের পরিচিত ঝর্ণাগুলির মধ্যে অন্যতম হলো কমলদহ ট্রেইলের ঝর্ণাগুলো। সহজ ট্রেইল এবং অল্প সময়ে কমলদহ ট্রেইলের ঝর্ণাগুলো দেখে আসা যায়, তাই এটি ভ্রমণপিয়াসুদের কাছে জনপ্রিয় গন্তব্য। কমলদহ ট্রেইলে বেশ কয়েকটি ঝর্ণা রয়েছে। ট্রেইলের উপরের দিকে ডানে-বামে ঝিরিপথ ভাগ হয়ে গেছে। এই ঝিরিপথ দিয়ে এগিয়ে গেলে ছোট-বড় ঝর্ণা ও ক্যাসকেড দেখতে পাবেন।
কিভাবে যাবেন
বাস
যেকোনো স্থান থেকে আপনাকে প্রথমে সীতাকুণ্ড উপজেলার বড় দারোগাহাট বাজারে পৌঁছাতে হবে। ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী যেকোনো বাসে যেতে পারেন। ঢাকা থেকে সীতাকুণ্ড বাস ভাড়া প্রায় ৮০০ টাকা।
ট্রেন
ঢাকা থেকে ট্রেনে করেও যেতে পারেন (ভাড়া ২৬৫-৯০৯ টাকা)। ফেনী স্টেশনে নেমে, সেখান থেকে লোকাল বাসে বড় দারোগাহাট বাজারে আসা যাবে।
চট্টগ্রাম থেকে
চট্টগ্রামের অলংকার মোড় থেকে সীতাকুণ্ড আসা যায়। চট্টগ্রাম থেকে বাস ভাড়া ৮০ টাকা।
বড় দারোগাহাট বাজার থেকে ঢাকার দিকে কিছুটা এগিয়ে গেলে একটি ইট খোলার দেখা মিলবে। ইট খোলা পার হলে ডান দিকের মাটির রাস্তা ধরে এগিয়ে ঝিরিপথ পাবেন, যা কমলদহের ঝিরি শুরু। ঝিরিপথ ধরে চললে কমলদহ ঝর্ণার দেখা মিলবে, যা অনেকেই ক্যাসকেড নামে চিহ্নিত করে। ঝর্ণা পার হয়ে ঝিরিপথ ধরে উপরে উঠলে অন্যান্য ঝর্ণাগুলো দেখতে পাবেন। যদি সবগুলো ঝর্ণা দেখতে চান, তবে ফটিকছড়ি-বারৈয়াঢালা রুট ধরে নারায়ন আশ্রম হয়ে বড় দারোগাহাটে ফিরে আসতে হবে।
কমলদহ ট্রেইল
কমলদহ ঝর্ণার উপরে উঠলে একটি ছোট ক্যাসকেড পার হয়ে ঝিরিপথ ধরে কিছুটা এগিয়ে গেলে ঝিরিপথ দুটি ভাগ হয়ে যাবে—ডান ও বামে। প্রথমে বাম দিকের ঝিরিপথ ধরে এগিয়ে যান। কিছুটা দূর গেলে আবারো ডান দিকে অন্য একটি ঝিরিপথ পাবেন, তবে সেদিকে এখনই যাবেন না। সোজা ঝিরিপথ ধরে এগুলেই ছাগলকান্দা ঝর্ণা দেখতে পাবেন। ঝর্ণা দেখে ফিরতেও সোজা ঝিরিপথ ধরে এগিয়ে যান।
কিছুটা এগিয়ে গেলে একটি ক্যাসকেড পাবেন, সাবধানে ক্যাসকেডের উপরে উঠে যান। এরপর দুটি ঝিরিপথ পাবেন, যেখান থেকে দুটি সুন্দর ঝর্ণার দেখা মিলবে। ফিরতে গিয়ে কমলদহ ঝর্ণার প্রথম ভাগে ফিরে আসুন, যেখানে ঝিরিপথ দুটি ভাগ হয়ে গিয়েছিল।
এবার ঝিরিপথ ধরে একটি ঝর্ণা পাবেন। ঝর্ণার পাশের পাহাড়ি রাস্তা দিয়ে উপরে উঠলেই আরেকটি ক্যাসকেড পাবেন। ক্যাসকেডের উপরে উঠে একটু এগুলেই একটি ছোট ঝর্ণার দেখা পাবেন। এখানে না থেমে, ঝর্ণাটির পাথর বেয়ে উপরে উঠলে মনে হবে আপনি কোনো অন্ধকার সুরঙ্গে আছেন। কিন্তু হাল না ছেড়ে ২ মিনিট হাঁটার পর পাথরভাঙ্গা ঝর্ণার দেখা পাবেন।
পাথরভাঙ্গা ঝর্ণা দেখে ফিরে আসুন, আরেকটি ক্যাসকেড পার হলে ডানে উঠার একটি পাহাড়ি রাস্তা দেখতে পাবেন। পাহাড়ে উঠে আবারো রাস্তা দুটি ভাগ হয়ে যাবে। পাহাড়ের উপরের রাস্তা ধরে এগিয়ে গেলে তিন মোড়ে পৌঁছাবেন, তারপর ডান দিকের রাস্তা ধরে এগিয়ে ঝরঝরি ঝর্ণা দেখতে পাবেন। সামনে এগিয়ে গেলে পাকা রাস্তা পাবেন, যা নায়নআশ্রম, ফরেস্ট অফিস হয়ে বড় দারোগারহাট স্টেশনে পৌঁছাবে।
থাকা ও খাওয়া
কোথায় থাকবেন
মিরসরাইয়ে পর্যটকদের থাকার জন্য তেমন হোটেল নেই, তাই আপনাকে সীতাকুন্ডে থাকতে হবে। সীতাকুন্ড বাজারে কিছু সাধারণ মানের হোটেল রয়েছে, যেমন:
- হোটেল সাইমুন (ভাড়া ৩০০-৫০০ টাকা)
- হোটেল সৌদিয়া (ভাড়া ৮০০-১৬০০ টাকা)
এছাড়া, বারৈয়াঘাটে গোল্ডেন নামে একটি হোটেল রয়েছে। ভাটিয়ারীতে কিছু ভালো মানের হোটেলও আছে।
কোথায় খাবেন
সীতাকুন্ডে খাবারের জন্য কিছু ভালো হোটেল রয়েছে, যেমন আল আমীন হোটেল।
সীতাকুন্ডের দর্শনীয় স্থান
কমলদহ ঝর্ণা ছাড়াও সীতাকুন্ডে অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে, যেমন:
- সীতাকুণ্ড পার্ক
- চন্দ্রনাথ মন্দির
- বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত
- গুলিয়াখালি সমুদ্র সৈকত
- কুমিরা ফেরী ঘাট
- ঝরঝরি ঝর্ণা ট্রেইল
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!