চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড সবুজ পাহাড়ে ঘেরা এক ঐতিহাসিক ও পৌরাণিক অঞ্চলের নাম। এই পাহাড়ের খাঁজে লুকিয়ে রয়েছে প্রকৃতির অপার বিস্ময়—ছোট বড় অসংখ্য ছড়া ও ঝর্ণা। পাহাড়ের রহস্যময় পরিবেশে এক অনন্য স্থানে প্রাচীন একটি মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়, যা কুমারীকুন্ড (Kumarikundo) নামে পরিচিত। অতীতে হিন্দু সম্প্রদায় উষ্ণ প্রস্রবণ বা হট স্প্রিং-কে পবিত্র বলে মনে করতেন। সীতাকুণ্ডে অবস্থিত লবণাক্ষকুন্ড ও অগ্নিকুন্ডের মতো বুদবুদ আকারে নির্গত গ্যাসে জ্বলতে থাকা কুণ্ডগুলোর সাথে কুমারীকুন্ডের মিল রয়েছে। সময়ের পরিক্রমায় মূল তীর্থস্থান প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে সরে গেছে, আর প্রাচীন ইটের নির্মাণগুলো মাটির নিচে চাপা পড়েছে।
কুমারীকুন্ড আসলে একটি পাথর দিয়ে বাঁধানো ৮-১০ ফুট গভীর চৌবাচ্চা, যার স্বচ্ছ নীল পানির নীচ থেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে গ্যাসের বুদবুদ বের হচ্ছে। মন্দিরের চারপাশের দেয়ালগুলো এখন অদ্ভুত আকৃতির পাথরের দখলে। সময়ের স্রোতে মানুষের নজরের আড়ালে থাকা এই স্থানটি এখন অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় পর্যটকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে।
কিভাবে যাবেন
ঢাকার সায়েদাবাদ, ফকিরাপুল ও মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে এস আলম, শ্যামলী, সৌদিয়া, ইউনিক, হানিফ, ঈগল, এনা ইত্যাদি পরিবহনের বাসে সরাসরি সীতাকুণ্ড যেতে পারবেন। ট্রেনে যেতে চাইলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর ট্রেনে ফেনী স্টেশনে নেমে রিকশা বা অটোতে ফেনী মহিপাল বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে সেখান থেকে লোকাল বাসে সীতাকুণ্ড পৌঁছানো সম্ভব। সীতাকুণ্ডের কুমিরা এলাকায় গিয়ে স্থানীয়দের সাহায্যে কুমারীকুন্ডে পৌঁছানো যাবে।
কোথায় থাকবেন
সীতাকুণ্ডে থাকার জন্য হোটেল সৌদিয়া, সাইমুন আবাসিক এবং সীতাকুণ্ড বাজারের আরও কয়েকটি মাঝারি মানের হোটেল রয়েছে। এছাড়া ডাকবাংলোতে থাকার সুযোগ নিতে পারেন, তবে তার জন্য পূর্ব অনুমতি প্রয়োজন। ভালো মানের হোটেলে থাকতে চাইলে চট্টগ্রামের অলংকার মোড়, স্টেশন রোড, নিউমার্কেট এবং জিইসি মোড় এলাকার হোটেলগুলো বেছে নিতে পারেন।
কোথায় খাবেন
সীতাকুণ্ডে সাধারণ মানের খাবারের জন্য সৌদিয়া রেস্টুরেন্ট, আপন রেস্টুরেন্ট এবং আল আমিন উল্লেখযোগ্য। এর মধ্যে ভালো খাবার পরিবেশনার জন্য আল আমিন রেস্টুরেন্টের বিশেষ সুনাম রয়েছে।
সীতাকুণ্ডের অন্যান্য দর্শনীয় স্থান
সীতাকুণ্ডে আরও অনেক জনপ্রিয় ভ্রমণস্থান রয়েছে। এর মধ্যে সীতাকুণ্ড ইকো পার্ক, গুলিয়াখালি বীচ, বাঁশবাড়িয়া বীচ, চন্দ্রনাথ পাহাড়, নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা এবং কমলদহ ঝর্ণা উল্লেখযোগ্য।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!