রাজধানী ঢাকার নিকটবর্তী নরসিংদী জেলার পলাশ উপজেলার ডাংগা বাজারের কাছে অবস্থিত উকিলের বাড়ি বা লক্ষণ সাহার জমিদার বাড়ি। নিখুঁত কারুকার্যে নির্মিত এই জমিদার বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন লক্ষণ সাহা, যিনি প্রধান জমিদারের অধীনস্থ একজন সাব-জমিদার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। লক্ষণ সাহার তিন পুত্র—পেরিমোহন সাহা, নিকুঞ্জ সাহা ও বঙ্কু সাহা। দেশভাগের সময় বঙ্কু সাহা ভারত পাড়ি জমান, এবং ১৯৭১ সালের পূর্বে নিকুঞ্জ সাহাও ভারতে চলে যান। কেবলমাত্র পেরিমোহন সাহা এই বাড়িতে থেকে যান। পরবর্তীতে পেরিমোহন সাহার পুত্র বৌদ্ধ নারায়ণ সাহা উকিল আহম্মদ আলীর কাছে জমিদার বাড়িটি বিক্রি করে দেন। সেই থেকে এটি স্থানীয়ভাবে "উকিলের বাড়ি" নামে পরিচিত। জানা যায়, বর্তমানে লক্ষণ সাহার বংশধরের একটি অংশ নারায়ণগঞ্জ শহরে বসবাস করছেন।
আশেপাশের দর্শনীয় স্থান
লক্ষণ সাহার জমিদার বাড়ির নিকটেই আরও তিনটি জমিদার বাড়ি রয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে—সুদান সাহার বাড়ি, বিশাল কুন্ডু সাহার জমিদার বাড়ি এবং মাধবদী এলাকায় অবস্থিত বালাপুর বিধান সাহার জমিদার বাড়ি। শিল্পসমৃদ্ধ বালাপুর বিধান সাহার জমিদার বাড়ি ভ্রমণে মাধবদী বাজার বা বাসস্ট্যান্ড থেকে অটো রিকশা নিয়ে সহজেই যেতে পারেন।
কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে
ঢাকার গুলিস্তান থেকে মেঘালয় লাক্সারি বাসে করে পাঁচদোনা মোড় পর্যন্ত যেতে পারবেন। পাঁচদোনা মোড়ে নেমে নিকটবর্তী গিরিশ চন্দ্র সেনের বাড়ি দেখে নিতে পারেন। সেখান থেকে জনপ্রতি ২০ টাকা ভাড়ায় ডাংগা বাজারে পৌঁছে রিকশা বা হেঁটে লক্ষণ সাহার জমিদার বাড়ি চলে যেতে পারবেন। পাঁচদোনা পর্যন্ত যেতে বাসের হেলপারকে আগে থেকে জানিয়ে রাখা ভালো।
টঙ্গী বা আবদুল্লাহপুর থেকে
টঙ্গী বা আবদুল্লাহপুর থেকে কালিগঞ্জ পর্যন্ত বাস বা লেগুনায় করে আসুন। কালিগঞ্জ নদীঘাটে গিয়ে স্থানীয়দের জিজ্ঞাসা করে ডাংগা যাওয়ার উপযুক্ত নৌকার খোঁজ নিন। নদী পার হয়ে সিএনজি, রিকশা বা অটো রিকশায় করে ডাংগা বাজারে পৌঁছাতে পারবেন। নদীঘাট থেকে ডাংগা বাজারের দূরত্ব মাত্র ৫ কিলোমিটার।
বনানী, মহাখালী বা উত্তরা থেকে
কুড়িল বিশ্বরোড হয়ে ৩০০ ফিট রাস্তা ধরে কাঞ্চন ব্রিজ পার হয়ে মায়ার বাড়ির মোড় পর্যন্ত যান। সেখান থেকে ডাংগা বাজারের উদ্দেশ্যে অটোরিকশা পাবেন। ডাংগা বাজার থেকে লক্ষণ সাহার জমিদার বাড়ি মাত্র ১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
খাবারের ব্যবস্থা
ডাংগা বাজারে পৌঁছে দুপুরের খাবার খেয়ে নিতে পারেন। এছাড়া দুপুর ১২টা থেকে ১টার মধ্যে আব্দুল হাইয়ের বিখ্যাত আলুর চপ এবং দই খাওয়ার সুযোগ মিস করবেন না।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!