নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার বাগাঘ ইউনিয়নের কুন্দেরপাড়ায় অবস্থিত লালমাটির শহর সোনাইমুড়ি টেক (Sonaimuri Tek)। এখানকার লাল মাটির পাহাড়ি টিলা, সমতল ভূমির ঘরবাড়ি, পাখির কূজন আর অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যে কোনো ভ্রমণপ্রেমীকে মুগ্ধ করে। ছুটির দিনগুলোতে সোনাইমুড়ি বিনোদন পার্কে থাকে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়।
লোকেশন ও আকর্ষণীয় দৃশ্যাবলী
নরসিংদী থেকে শিবপুর যাওয়ার পথে চোখে পড়বে গাছপালায় ঘেরা লাল মাটির অসংখ্য টিলা। এসব টিলার চূড়া থেকে পাহাড় ও সমতলের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করা যায়। লাল মাটির এই টিলার মাঝ দিয়ে চলে গেছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক। জায়গাটি শুটিং স্পট হিসেবেও জনপ্রিয়, যেখানে প্রায়ই নাটক ও সিনেমার দৃশ্য ধারণ করা হয়। শিশুদের জন্য সোনাইমুড়ি টেকে রয়েছে বিভিন্ন বিনোদনের ব্যবস্থা।
প্রবেশমূল্য ও সময়সূচি
সপ্তাহের সাত দিন খোলা থাকে সোনাইমুড়ি টেক বিনোদন পার্ক। প্রবেশমূল্য মাত্র ২০ টাকা।
যাতায়াত ব্যবস্থা
ঢাকা থেকে নরসিংদীর দূরত্ব প্রায় ৪৯ কিলোমিটার। ঢাকা থেকে ট্রেন বা বাসে সহজেই নরসিংদী যাওয়া যায়। মহাখালী, গুলিস্তান, সায়েদাবাদ ও আব্দুল্লাহপুর থেকে ঢাকা-সিলেট রুটের বাসে কাঁচপুর ব্রিজ পার হয়ে নরসিংদী পৌঁছানো যায়। বাসভাড়া ১০০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে। ট্রেনযোগে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে মহানগর এক্সপ্রেস, কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস বা এগারোসিন্দুর গোধূলি ট্রেনে যাওয়া যায়। নরসিংদী থেকে সোনাইমুড়ি টেকের দূরত্ব মাত্র ১৪ কিলোমিটার। শিবপুরের কুন্দেরপাড়া পৌঁছে রিকশায় সোনাইমুড়ি টেকে যাওয়া যায়।
আবাসন সুবিধা
সোনাইমুড়ি টেক পার্কে পাহাড়ি টিলার উপরে কিছু বাংলো ও হোটেল রয়েছে। রাত্রিযাপনের জন্য আগে থেকেই বুকিং দেওয়া প্রয়োজন। এছাড়া নরসিংদী শহরে সরকারি-বেসরকারি রেস্ট হাউস ও আবাসিক হোটেলের সুবিধা রয়েছে।
খাবারের ব্যবস্থা
নরসিংদী থেকে সোনাইমুড়ি টেকে যাওয়ার পথে সবুজ বাংলা হোটেল, হোটেল বুশরা, গ্রামীণ হোটেল ও আল আমিন হোটেলসহ বেশ কয়েকটি রেস্টুরেন্টে খাবার পাওয়া যায়।
নরসিংদীর অন্যান্য দর্শনীয় স্থান
সোনাইমুড়ি টেকের পাশেই রয়েছে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান “কুমারটেক”, যেখানে তিন হাজার বছরের পুরনো মৃৎশিল্পের নিদর্শন পাওয়া গেছে। আরও ঘুরে দেখতে পারেন সৃষ্টি গড়, ইটাখোলা, জয়নগর, মরাজালের লাল মাটির বাড়ি এবং অন্যান্য প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। এছাড়া আনন্দ পার্ক, গিরিশ চন্দ্র সেনের বাড়ি, লক্ষণ সাহার জমিদার বাড়ি, বালাপুর জমিদার বাড়ি, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর এবং ড্রিম হলিডে পার্কও উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!