নরসিংদী জেলার বেলাব উপজেলার পাটুলি ইউনিয়নে অবস্থিত শাহ ইরানী (রঃ) মাজার শরীফ, যা ভক্ত ও ইতিহাসপ্রেমীদের কাছে একটি প্রাচীন ও আকর্ষণীয় স্থান। হযরত শাহ ইরানী (রঃ)-এর জীবনী সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া না গেলেও, ইতিহাসবিদদের মতে, তিনি পারস্যের রাজ পরিবারের একজন সদস্য ছিলেন এবং ইসলাম প্রচারের লক্ষ্যে ভারতীয় উপমহাদেশে আগমন করেন। ধারণা করা হয়, তাঁর বয়স তখন ছিল প্রায় ৪০ বছর। প্রকৃত নাম অজানা থাকায় এবং ইরান থেকে আগত হওয়ার কারণে তিনি "শাহ ইরানী" নামে পরিচিতি লাভ করেন।
মাজার শরীফ ও দিঘীর আকর্ষণ
প্রায় ৬৩ একর জায়গা নিয়ে শাহ ইরানী (রঃ) মাজার শরীফ গড়ে উঠেছে। এর পূর্ব দিকে রয়েছে এক বিশাল দিঘী, যা বৃহত্তর ঢাকার বৃহত্তম দিঘী হিসেবে পরিচিত। সরকারি নথিতে এটি "মহারানীর দিঘী" নামে উল্লেখিত। মাজার শরীফের স্থাপত্য সুলতানি আমলের নকশার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে, এটি ৫ম বা ৬ষ্ঠ শতকের পূর্বের একটি স্থাপত্য নিদর্শন। মাজারের সামনে থাকা প্রাচীন পাথর ও খিলান সুদূর অতীতের ইতিহাস বহন করছে।
যাতায়াত নির্দেশিকা
ঢাকা থেকে সিলেট, কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া বা নরসিংদীগামী বাসে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের মরজাল বা বারৈচা বাসস্ট্যান্ডে নেমে সিএনজি বা স্থানীয় যানবাহনে পোড়াদিয়া বাজার পৌঁছান। সেখান থেকে রিকশায় সহজেই মাজারে যেতে পারবেন। সরাসরি মরজাল বা বারৈচা থেকে সিএনজি পাওয়া যায়।
থাকার ব্যবস্থা
সারা দিনে মাজার পরিদর্শন শেষে সন্ধ্যার মধ্যে ঢাকায় ফিরে আসা সম্ভব। তবে প্রয়োজন হলে নরসিংদীর ইব্রাহীম কটেজ, সার্কিট হাউজ, এলজিইডি রেস্ট হাউজ বা জেলা পরিষদের ডাকবাংলোয় রাত্রিযাপন করা যায়।
খাবার ও স্থানীয় স্বাদ
নরসিংদীতে ফাল্গুনি হোটেল, বাবুর্চি আলমগীর হোটেল, বন্ধু হোটেল ও খোকন হোটেলের মতো বেশ কিছু খাবারের জায়গা রয়েছে। এখানকার বিখ্যাত খাবারের মধ্যে রসগোল্লা, লালমোহন, খিরমোহন ও শাহী জিলাপি অন্যতম। ভেলানগরের মালাই চা স্বাদ নেওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করবেন না!
শাহ ইরানী (রঃ) মাজার শরীফ একদিকে ঐতিহাসিক স্থাপনা, অন্যদিকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অনন্য নিদর্শন। এটি ঘুরে দেখার পাশাপাশি আপনি এখানকার অতীত ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে পরিচিত হতে পারবেন।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!