নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলার বজরা ইউনিয়নে অবস্থিত ঐতিহাসিক বজরা শাহী মসজিদ, যা দিল্লির শাহী জামে মসজিদের নকশা অনুসরণ করে নির্মিত। ইতিহাস অনুযায়ী, ১৭৪১-৪২ সালে জমিদার আমানুল্লাহ ৩০ একর জায়গায় বিশাল একটি দীঘি খনন করেন এবং দীঘির পশ্চিম প্রান্তে দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদটি তৈরি করেন। মসজিদটির দৈর্ঘ্য ১১৬ ফুট, প্রস্থ ৭৪ ফুট এবং উচ্চতা প্রায় ২০ ফুট। তিন গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটির ভিত্তি মাটির ২০ ফুট নিচে স্থাপন করা হয়েছে, আর গম্বুজগুলো সুন্দর মার্বেল পাথর দিয়ে সাজানো। মসজিদের প্রবেশপথে তিনটি ধনুকাকৃতি দরজা ও কেবলার দিকে কারুকার্য খচিত তিনটি মিহরাব রয়েছে। এছাড়া প্রবেশ তোরণের উপর আরও কয়েকটি ছোট গম্বুজ দেখা যায়। ১৯০৯ সালে মসজিদটি প্রথমবার সংস্কার করা হয়।
ধর্মীয় বিশ্বাস ও ঐতিহ্য
লোকমুখে প্রচলিত আছে, বজরা শাহী মসজিদে মানত করলে সুসংবাদ পাওয়া যায়। অনেকেই রোগমুক্তির আশায় মসজিদে টাকা-পয়সা ও সিন্নি দান করেন। ১৯৯৮ সালের ২৯ নভেম্বর থেকে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এই ঐতিহাসিক স্থাপনার সংরক্ষণে কাজ করছে।
প্রথম ইমাম ও ধারাবাহিকতা
মোগল সম্রাট মোহাম্মদ শাহের অনুরোধে, সৌদি আরবের কাবা শরীফ থেকে মাওলানা শাহ আবু সিদ্দীক এসে বজরা শাহী মসজিদের প্রথম ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। বর্তমানে তাঁর সপ্তম প্রজন্ম ইমাম হাসান সিদ্দীকি মসজিদটির ইমামতি করছেন।
কিভাবে যাবেন
- বাসে: ঢাকা সায়েদাবাদ থেকে একুশে এক্সপ্রেস, মুনলাইন এন্টারপ্রাইজ বা হিমাচল এক্সপ্রেসের বাসে নোয়াখালীর মাইজদী আসতে পারেন (ভাড়া ৫০০-৫৫০ টাকা)। মাইজদী থেকে সোনাইমুড়ীগামী লোকাল বাস, সিএনজি বা অটোরিকশায় বজরা হাসপাতালে নেমে ২০০ গজ হাঁটলেই মসজিদে পৌঁছানো যায়।
- ট্রেনে: ঢাকার কমলাপুর থেকে সপ্তাহে ৬ দিন বিকাল ৪:২০-এ উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেন ছাড়ে, মাইজদী পৌঁছাতে সময় লাগে প্রায় ৬ ঘণ্টা (ভাড়া ৩১৫ টাকা)।
কোথায় থাকবেন
নোয়াখালীতে থাকার জন্য বেশ কয়েকটি মাঝারি মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে, যেখানে কম খরচে থাকা ও খাবারের সুবিধা মেলে। উল্লেখযোগ্য হোটেলগুলোর মধ্যে আছে:
- পুবালি হোটেল (০৩২১-৬১২৫৭)
- হোটেল আল মোরশেদ (০৩২১-৬২১৭৩)
- হোটেল রাফসান (০৩২১-৬১৩৯৫)
- সার্কিট হাউস, রয়েল হোটেল, নোয়াখালী গেস্ট হাউস
কাওসার আহমেদ
ভ্রমণকারীঅনেক পুরাতন একটি মসজিদ, খুব সুন্দর দেখতে