ফেনী জেলা শহর থেকে প্রায় ২৪ কিলোমিটার দূরে চম্পকনগরে অবস্থিত ঐতিহাসিক শমসের গাজীর দীঘি। নবাব সিরাজদৌল্লার শাসনামলে “ভাঁটির বাঘ” নামে পরিচিত শমসের গাজী ছিলেন ত্রিপুরা রাজ্যের রাজা, ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবী নেতা এবং কৃষক বিদ্রোহের নায়ক। স্থানীয় মানুষের সুপেয় পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে তিনি বেশ কয়েকটি দীঘি খনন করেন, যার মধ্যে শমসের গাজীর দীঘি তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
শমসের গাজীর জীবনী ও অবদান
ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলায় জন্ম নেওয়া শমসের গাজী ছোটবেলায় পিতৃহারা হলে শুভপুরের তালুকদার জগন্নাথ সেনের আশ্রয়ে বড় হন। জগন্নাথ সেনের মৃত্যুর পর, তিনি শুভপুরের খাজনা আদায়ের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গড়ে তোলেন শক্তিশালী লাঠিয়াল বাহিনী এবং জনসাধারণের কল্যাণে নানা উন্নয়নমূলক কাজ করেন। ১৭৫৭ সালে ব্রিটিশ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে তিনি শহীদ হন। বর্তমানে ভারত সীমান্তবর্তী এলাকায় শমসের গাজীর স্মৃতিবিজড়িত বেশ কয়েকটি ঐতিহাসিক স্থাপনা রয়েছে, যার মধ্যে শমসের গাজীর সুড়ঙ্গ অন্যতম।
কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে ফেনী যেতে পারেন শ্যামলী, ইউনিক, সোহাগ, গ্রিন লাইন, এস আলম, কেয়া, সৌদিয়া সহ বিভিন্ন বাসে। এছাড়া কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে মহানগর গোধূলি বা তূর্ণা এক্সপ্রেস ট্রেনে ফেনী পৌঁছানো যায়। ফেনীর পরশুরাম উপজেলা থেকে হাসপাতাল মোড় হয়ে সহজেই শমসের গাজীর দীঘিতে যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন
ফেনী জেলায় থাকা-খাওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেল রয়েছে, যেমন:
- হোটেল বিলাস
- হোটেল আল করিম
- হোটেল গাজী
- হোটেল মিড নাইট
কোথায় খাবেন
চম্পক বাজারে হালকা চা-নাস্তা করার ছোট দোকান পাওয়া যাবে। তবে ফেনী শহরে বিভিন্ন মানের রেস্তোরাঁয় স্থানীয় ও বাহারি খাবারের স্বাদ নিতে পারেন।
ফেনীর অন্যান্য দর্শনীয় স্থান
শুধু শমসের গাজীর দীঘিই নয়, ফেনী জেলায় আরও বেশ কয়েকটি দর্শনীয় স্থান আছে:
- রাজাঝির দীঘি
- শমসের গাজীর বাঁশের কেল্লা
- প্রতাপপুর জমিদার বাড়ি
- আব্দুস সালাম স্মৃতি জাদুঘর
প্রাচীন ইতিহাস, ঐতিহ্য ও মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা শমসের গাজীর দীঘি নিঃসন্দেহে ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য এক অনন্য গন্তব্য। আপনি যদি ইতিহাস ও প্রকৃতির সমন্বয়ে একটি দিন কাটাতে চান, তাহলে অবশ্যই এই স্থানে একবার ঘুরে আসতে পারেন!
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!