অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য লক্ষ্মীপুরের মতিরহাট সৈকত (Motirhat Beach) দিন দিন পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে। কমলনগরের মেঘনা নদীর তীরে অবস্থিত এই সৈকতটি মূলত মতিরহাট বাজার রক্ষা বাঁধ তৈরির পর স্বাভাবিকভাবেই প্রায় দুই কিলোমিটার দীর্ঘ বেলাভূমিতে রূপ নেয়। এর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে অনেকে একে ‘মতিরহাট মেঘনা সৈকত’ বা ‘মিনি কক্সবাজার’ নামে ডাকেন।
সৈকতের সৌন্দর্য ও অভিজ্ঞতা
একদিকে বিশাল বেলাভূমি, অন্যদিকে সবুজে ঘেরা বেড়িবাঁধ — যেন প্রকৃতির অপূর্ব এক সৃষ্টি। সূর্যাস্তের সময় বাঁধ ধরে হাঁটলে মনে হবে, আপনি কুয়াকাটা বা কক্সবাজারের কোনো অংশে আছেন। নদীর পাড় ধরে অনেক দূর পর্যন্ত হাঁটার সুযোগও রয়েছে। পথে চোখে পড়বে বিশাল নারিকেল-সুপারি বাগান, বৈচিত্র্যময় নদী তীরের দৃশ্য আর তাজা ইলিশের বাজার, যা আপনার ভ্রমণকে আরও সমৃদ্ধ করবে।
নদীতে ঘুরতে চাইলে স্থানীয় নৌকা ভাড়া করে চলে যেতে পারেন মেঘনার ভাসমান চরে। আর যদি ইচ্ছা হয়, সরাসরি নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েও সাঁতার কাটা যায় — কোনো বাঁধা নেই!
কিভাবে যাবেন
বাংলাদেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে লক্ষ্মীপুর শহরের ঝুমুর ইলিশ স্কয়ারে এসে পৌঁছান। সেখান থেকে বাস, সিএনজি বা পিকআপে করে কমলনগরের তোরাবগঞ্জ বাজারে নামুন। এরপর অন্য সিএনজিতে সহজেই মতিরহাট নদীর পাড়ে যেতে পারবেন।
ঢাকা থেকে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে গ্রীনল্যান্ড এক্সপ্রেস, আলবারাকা, আলম, রয়েল, ইকোনো বা ঢাকা এক্সপ্রেসের মতো পরিবহন ব্যবহার করতে পারেন। বাসভাড়া পড়বে ৪৫০-৫৫০ টাকা, আর সময় লাগবে ৪-৫ ঘণ্টা।
খাবার ও কেনাকাটা
তাজা ইলিশ, সামুদ্রিক মাছ, কিংবা খাঁটি মহিষের দুধ ও দইয়ের স্বাদ নিতে চাইলে মতিরহাট মাছঘাট হবে সেরা জায়গা। স্থানীয় হোটেলগুলোতেও পাওয়া যায় সুস্বাদু খাবার। লক্ষ্মীপুর শহরে হোটেল রাজমহল, কুটুম বাড়ি, আব্বাস আলী রেস্টুরেন্ট বা ফুড গার্ডেন রেস্টুরেন্টে খেতে পারেন।
থাকার ব্যবস্থা
বর্তমানে মতিরহাটে থাকার নির্দিষ্ট কোনো ব্যবস্থা নেই। তবে লক্ষ্মীপুর শহরের আবাসিক হোটেল, যেমন সোনার বাংলা গেস্ট হাউজ, হোটেল আবেহায়াত, হোটেল রোজ বা স্টার গেস্ট হাউজে আরামদায়কভাবে রাত কাটাতে পারবেন।
মতিরহাট সৈকত প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এক অনন্য গন্তব্য। যদি শহরের কোলাহল থেকে কিছুটা সময় প্রকৃতির সান্নিধ্যে কাটাতে চান, তবে অবশ্যই এই সৈকত ভ্রমণের পরিকল্পনা করুন!
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!