শেরপুর জেলা শহর থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁওয়ে, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের অধীনে গড়ে উঠেছে মধুটিলা ইকো পার্ক। এই পার্কটি প্রকৃতিপ্রেমী মানুষের কাছে একটি আকর্ষণীয় ভ্রমণ গন্তব্য। পার্কে রয়েছে শোভাবর্ধনকারী ও বিরল প্রজাতির বৃক্ষের বনায়ন এবং ২০ একর জমিতে ঔষধি গাছের সমৃদ্ধ বনাঞ্চল।
এছাড়াও এখানে আছে রেস্ট হাউজ, বন্যপ্রাণীর ভাস্কর্য, পর্যবেক্ষণ টাওয়ার, স্টার ব্রিজ, মিনি চিড়িয়াখানা, ক্যান্টিন, আকর্ষণীয় রাইড এবং শিশুদের জন্য খেলার আয়োজন। পার্কের লেকে ঘুরে বেড়ানোর জন্য রয়েছে ৫টি দেশীয় নৌকা ও ৩টি প্যাডেল বোট। প্রকৃতির স্নিগ্ধতা এবং পাহাড়ের হাতছানি প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অসংখ্য পর্যটককে এখানে টেনে আনে।
মধুটিলা ইকোপার্কের কাছাকাছি গজনী অবকাশ কেন্দ্র অবস্থিত। সময় হাতে থাকলে সেখানেও ঘুরে আসার সুযোগ রয়েছে।
থাকার ব্যবস্থা
মধুটিলায় রাত যাপনের সুযোগ নেই। তবে দিনের বেলা বিশ্রামের জন্য রয়েছে মহুয়া রেস্ট হাউজ, যা ব্যবহার করতে শেরপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে অনুমতি নিতে হয়।
খরচ
- প্রবেশ টিকিট: জনপ্রতি ২০ টাকা
- ওয়াচ টাওয়ার ফি: জনপ্রতি ১০ টাকা
- রাইড টিকিট: জনপ্রতি ২০-৪০ টাকা
মধুটিলা ইকো পার্কে যাওয়া
ঢাকা থেকে সরাসরি মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার বা মিনিবাস রিজার্ভ করে মধুটিলা পৌঁছানো যায়। মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে ড্রিমল্যান্ড, আনন্দ বা তুরাগ বাস সার্ভিসে ৯০ থেকে ১৪০ টাকা ভাড়ায় শেরপুর আসা যায়। এসি বাসের জন্য ড্রিমল্যান্ড স্পেশাল সার্ভিসে ৫০০-৬০০ টাকায় আরামদায়ক যাত্রা করা যায়। শেরপুর থেকে সিএনজি বা পিকআপ ভ্যানে মধুটিলা ইকোপার্কে পৌঁছানো যায়।
শেরপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে শাপলা চত্বর পর্যন্ত জনপ্রতি ১০ টাকা অটো রিকশায় যাওয়া যায়। সেখান থেকে গজনী-মধুটিলা ভ্রমণের জন্য রিজার্ভ অটো ৫০০-৭০০ টাকায় সারাদিন ভাড়া করা যায়, যা ৬-৭ জনের উপযোগী।
কোথায় থাকবেন
দিনের মধ্যেই ঘুরে ফিরে আসা সম্ভব। তবে শেরপুর শহরে ১৫০ থেকে ৫০০ টাকায় গেস্ট হাউজ এবং ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় হোটেল সম্পদ, কাকলী, বর্ণালী গেস্ট হাউজে থাকা যায়। সার্কিট হাউজ এবং অন্যান্য সরকারি রেস্ট হাউজেও থাকার সুযোগ আছে।
- ফোন নম্বর:
- সার্কিট হাউজ: ০৯৩১-৬১২৪৫
- হোটেল সম্পদ: ০১৭১২৪২২১৪৫
- কাকলী গেস্ট হাউজ: ০১৯১৪৮৫৪৪৫০
কোথায় খাবেন
খাবারের জন্য শেরপুর শহর সবচেয়ে ভালো। নিউ মার্কেট এলাকায় হোটেল শাহজাহান, হোটেল আহার বা হোটেল প্রিন্সে মানসম্মত খাবার পাওয়া যায়।
মধুটিলা ইকো পার্ক প্রকৃতি ও পরিবেশের এক অনন্য নিদর্শন। সবুজে ঘেরা পাহাড়ের মাঝে দিন কাটাতে এটি হতে পারে আপনার পরবর্তী গন্তব্য।
ফখরুল ইসলাম
ভ্রমণকারীআমাদের শেরপুর, খুব সুন্দর ❤️❤️