শেরপুর জেলা সদরে অবস্থিত জমিদার সতেন্দ্র মোহন চৌধুরী ও জ্ঞানেন্দ্র মোহন চৌধুরীর জমিদার বাড়ি "পৌনে তিন আনী জমিদার বাড়ি" নামে পরিচিত। গ্রিক স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত এই বাড়ি তার অনন্য নকশার জন্য অন্যান্য জমিদার বাড়ির চেয়ে আলাদা। যদিও সময়ের বিবর্তনে অনেক কিছু হারিয়ে গেছে, তবে এই বাড়ির সুন্দরভাবে নকশাকৃত স্তম্ভগুলো এখনো জমিদারি আমলের গৌরবের প্রতীক। স্তম্ভগুলো চতুষ্কোণ আকৃতির এবং এতে বর্গাকার নকশা ব্যবহার করা হয়েছে।
জমিদার বাড়ির স্থাপত্যশৈলী
বাড়ির অভ্যন্তরে রয়েছে একটি সুপ্রশস্ত মন্দির, যার বেদি ও প্রবেশদ্বারের অলংকৃত স্তম্ভ নজর কাড়ে। দেয়ালের আস্তরণ ও পলেস্তারে চুন-সুড়কীর ব্যবহার বাড়ির স্থাপত্যে একটি বিশেষ মাত্রা যোগ করেছে। ছাদ তৈরি করা হয়েছে লোহার রেলিং এবং চুন-সুড়কীর ঢালাই দিয়ে, যা জমিদারী স্থাপত্যের ঐতিহ্য বহন করে।
রংমহলের নান্দনিকতা
জমিদার বাড়ির দক্ষিণ-পূর্ব কোণে অবস্থিত রংমহল জমিদারি গাম্ভীর্য ও সৌন্দর্যের অন্যতম উদাহরণ। লতা-পাতা ও ফুলের নকশায় সজ্জিত এই রংমহল একসময় নাচ-গান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রাণকেন্দ্র ছিল। বাড়ির সামনে একটি শান বাঁধানো ঘাটসহ পুকুর জমিদার বাড়ির নান্দনিকতাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
যাতায়াত
ঢাকার মহাখালী থেকে ড্রিমল্যান্ড, তুরাগ বা আনন্দ পরিবহনের বাসে শেরপুর এসে সেখান থেকে স্থানীয় যানবাহনে মাত্র ১ কিলোমিটার দূরে এই জমিদার বাড়িতে পৌঁছানো যাবে।
থাকার ব্যবস্থা
রাত্রিযাপনের জন্য শেরপুরে রয়েছে বেশ কিছু মানসম্মত আবাসিক হোটেল। এর মধ্যে হোটেল আরাফাত, কাকলি গেস্ট হাউজ, বর্ণালী গেস্ট হাউজ, মোলস্না গেস্ট হাউজ ও হাসেম গেস্ট হাউজ উল্লেখযোগ্য।
খাবারের স্থান
শেরপুরের নিউ মার্কেট এলাকায় মানসম্মত বেশ কয়েকটি রেস্তোরাঁ রয়েছে, যেখানে সুলভ মূল্যে খাবার পাওয়া যায়।
শেরপুর জেলার দর্শনীয় স্থান
শেরপুরের অন্যান্য আকর্ষণীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে মাইসাহেবা জামে মসজিদ, রাজার পাহাড়, মধুটিলা ইকোপার্ক, গজনী অবকাশ কেন্দ্র এবং পানি-হাটা তারানি পাহাড়।
পৌনে তিন আনী জমিদার বাড়ি শেরপুর জেলার একটি ঐতিহ্যবাহী দর্শনীয় স্থান। এর স্থাপত্যশৈলী ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব প্রকৃতপক্ষে ভ্রমণপ্রেমীদের মুগ্ধ করবে।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!