নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার আটকান্দি গ্রামে অবস্থিত ঐতিহাসিক আটকান্দি নীলকুঠি মসজিদ প্রায় ১৫০ বছরের পুরনো। এটি মাওলানা আলিম উদ্দিন নির্মাণ করেছিলেন বলে ধারণা করা হয়। যদিও কোনো শিলালিপি না থাকায় মসজিদের সঠিক নির্মাণকাল নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি, তবে ধারণা করা হয় এটি ১৮৯০ সালের দিকে নির্মিত। স্থানীয়দের কাছে এটি নীলকুঠি মসজিদ নামেও পরিচিত।
ছোট মেঘনা নদীর তীরে অবস্থিত এই মসজিদটি দেখতে অনেকটাই আগ্রার তাজমহলের মতো। মসজিদে রয়েছে ৩৪টি কারুকার্যখচিত খিলান এবং মোগল স্থাপত্যের আদলে নির্মিত পুরু দেয়াল, পাথর বসানো মেহরাব, এবং ফুল-পাতার দৃষ্টিনন্দন নকশা। মসজিদটির ৮টি গম্বুজ রয়েছে, যার মধ্যে ৩টি মূল ভবনে এবং ৫টি বাইরে। এছাড়া বারান্দায় প্রবেশের জন্য ৫টি দরজা এবং মূল মসজিদ ভবনে ২টি দরজা রয়েছে।
যাতায়াত ব্যবস্থা
সড়কপথে যাওয়া:
ঢাকার মহাখালী, সায়েদাবাদ বা টঙ্গী বাসস্ট্যান্ড থেকে নরসিংদী পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছান। সেখান থেকে রিকশায় আরশিনগর সিএনজি স্ট্যান্ড গিয়ে সিএনজিতে চড়ে আমিরগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে যান। সেখান থেকে রিকশা বা সিএনজিতে আটকান্দি নীলকুঠি মসজিদে পৌঁছানো যাবে।
রেলপথে যাওয়া:
ঢাকা থেকে ট্রেনে নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনে নেমে সিএনজি বা অটোতে আমিরগঞ্জ হয়ে নীলকুঠি মসজিদ যেতে পারবেন।
থাকার ব্যবস্থা
নরসিংদীতে থাকার জন্য রয়েছে বিভিন্ন আবাসিক হোটেল যেমন:
- হোটেল নিরাপদ
- হোটেল রিয়াজ আবাসিক
- বীরপুর হোটেল
- আজিজ হোটেল
এছাড়াও সার্কিট হাউজ, এলজিইডির রেস্ট হাউজ ও জেলা পরিষদের ডাকবাংলোতে অনুমতি সাপেক্ষে রাত্রিযাপন করা যাবে।
খাবারের জায়গা
নরসিংদীতে খাওয়ার জন্য রয়েছে:
- ক্ল্যাশ অফ ফুডজ রেস্টুরেন্ট
- এনএফসি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট
- রমিজ হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট
এছাড়া, নরসিংদীর বিখ্যাত মিষ্টি রসগোল্লা, লালমোহন, খিরমোহন, এবং শাহী জিলাপি চেখে দেখতে ভুলবেন না।
অন্যান্য দর্শনীয় স্থান
নরসিংদী ভ্রমণের সময় আপনি আরও কিছু দর্শনীয় স্থানে যেতে পারেন:
- আনন্দ পার্ক
- গিরিশ চন্দ্র সেনের বাড়ি
- লক্ষণ সাহার জমিদার বাড়ি
- বালাপুর জমিদার বাড়ি
- ড্রিম হলিডে পার্ক
আটকান্দি নীলকুঠি মসজিদ শুধু ধর্মীয় স্থান নয়, এটি আমাদের ঐতিহ্যের অংশ। প্রকৃতির মাঝে এই স্থাপনাটি ইতিহাস ও সৌন্দর্যের এক অপরূপ মিশেল।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!