
ঢাকা থেকে প্রায় ৮৩ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত টাঙ্গাইল জেলা, আয়তনের দিক থেকে ঢাকা বিভাগের বৃহত্তম জেলা হিসেবে পরিচিত। এই জেলা শুধু তার ভৌগলিক বিস্তৃতি দিয়ে নয়, বরং অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং পর্যটন সম্ভাবনার কারণেও বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। হস্তশিল্প, খাদ্যপণ্য, ঐতিহ্যবাহী জামদানি ও নকশীকাঁথার জন্য যেমন টাঙ্গাইল পরিচিতি পেয়েছে, তেমনি নানা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং ঐতিহাসিক স্থাপনাও পর্যটকদের কাছে এই জেলাকে করে তুলেছে আকর্ষণীয়।
বিভিন্ন উদ্দেশ্যে—ব্যবসা, শিক্ষা, ভ্রমণ কিংবা বিশ্রামের খোঁজে—অনেকেই প্রতিনিয়ত টাঙ্গাইলে যাতায়াত করছেন। তাদের প্রয়োজন মেটাতে গড়ে উঠেছে আধুনিক এবং মানসম্পন্ন অনেক হোটেল ও রিসোর্ট।
এই প্রবন্ধে আমরা তুলে ধরেছি টাঙ্গাইল জেলার কিছু জনপ্রিয় ও উচ্চমানের হোটেল ও রিসোর্টের বিস্তারিত বিবরণ। হোটেলগুলোর তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে বিভিন্ন দিক বিবেচনায়—যেমন: রুমের মান, নিরাপত্তা ব্যবস্থা, সুযোগ-সুবিধার পরিসর এবং ভ্রমণকারীদের অভিজ্ঞতা ও মতামতের ভিত্তিতে। আপনি যদি টাঙ্গাইলে একটি আরামদায়ক ও নিরাপদ আবাসনের খোঁজে থাকেন, তাহলে এই গাইড আপনার জন্য একটি নির্ভরযোগ্য সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।
এলেঙ্গা রিসোর্ট
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর আধুনিক সুযোগ-সুবিধার এক অপূর্ব সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে টাঙ্গাইল জেলার অন্যতম জনপ্রিয় অবকাশ কেন্দ্র এলেঙ্গা রিসোর্ট (Elenga Resort)। ২০০৮ সালে সম্পূর্ণ ব্যক্তি মালিকানায় স্থাপিত এই রিসোর্টটি টাঙ্গাইল শহর থেকে মাত্র ৭ কিলোমিটার দূরে, কালিহাতি উপজেলার এলেঙ্গা নামক স্থানে অবস্থিত। যমুনা নদীর তীরে প্রায় ১৬৭ হেক্টর বিস্তৃত এলাকা জুড়ে নির্মিত এই রিসোর্টটি শহরের কোলাহল থেকে দূরে প্রকৃতির কোলে একটি স্বর্গীয় প্রশান্তি এনে দেয়।
প্রাকৃতিক পরিবেশ ও অবস্থান
এলেঙ্গা রিসোর্টের অন্যতম বিশেষত্ব হলো এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যপূর্ণ পরিবেশ। যমুনার কোলঘেঁষা এই রিসোর্টে প্রবেশ করলেই চোখে পড়ে সারি সারি সবুজ গাছপালা, খোলা আকাশ, আর পাখির কিচিরমিচির শব্দ। রিসোর্ট চত্বরজুড়ে রয়েছে মুক্ত বাতাস, শান্ত নদীর ধারা আর প্রাকৃতিক নৈসর্গের ছোঁয়া—যা যে কোনো পর্যটকের মন ভালো করে দেয়।
অবকাশ যাপনের জন্য আধুনিক আবাসন
এলেঙ্গা রিসোর্টে অতিথিদের জন্য রয়েছে বিভিন্ন ক্যাটাগরির রুম ও কটেজ:
- ৫টি ভিআইপি এসি স্যুট
- ১০টি এসি ডিলাক্স স্যুট
- ১৬টি এসি স্ট্যান্ডার্ড রুম
- ৮টি নন-এসি রুম
- প্রিমিয়াম কটেজ (৩ ও ৪ বেডরুম বিশিষ্ট)
এই সব রুমে রয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা, আধুনিক বাথরুম, রুম সার্ভিস, ওয়াই-ফাই, মিনিবার, ২৪ ঘণ্টার নিরাপত্তা, এবং অন্য সব প্রয়োজনীয় সুবিধা।
রেস্তোরাঁ ও খাদ্যসেবা
রিসোর্টের নিজস্ব রেস্তোরাঁয় দেশীয় খাবার থেকে শুরু করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মেনু পাওয়া যায়। রিসোর্টের বেকারি থেকে সদ্য তৈরি কেক, পেস্ট্রি ও অন্যান্য স্ন্যাকস উপভোগ করতে পারেন অতিথিরা। সন্ধ্যার পরে বার ও ডিস্কোতে জমে ওঠে প্রাণবন্ত পরিবেশ, যা পার্টিপ্রেমী ভিজিটরদের জন্য আদর্শ।
বিনোদন ও খেলাধুলার ব্যবস্থা
এলেঙ্গা রিসোর্টে পরিবার কিংবা বন্ধুবান্ধব নিয়ে সময় কাটানোর জন্য রয়েছে অসংখ্য সুযোগ-সুবিধা:
- সুইমিং পুল
- জিমনেসিয়াম
- ম্যাসেজ পার্লার ও স্পা
- টেনিস কোর্ট
- টেবিল টেনিস
- ফুটবল ও ক্রিকেট খেলার মাঠ
- ব্যাডমিন্টন কোর্ট
- কিডস প্লে জোন
- হর্স রাইডিং ও নৌকা ভ্রমণ
এছাড়া শিশুদের জন্য রয়েছে কিডস রুম, যেখানে ছোটরা নিরাপদ পরিবেশে খেলাধুলা করতে পারে।
পিকনিক ও কর্পোরেট ইভেন্ট
রিসোর্টটিতে রয়েছে পাঁচটি পিকনিক স্পট, যেখানে পরিবারের ছোট-বড় সদস্য সবাই মিলে দিনব্যাপী আনন্দ উপভোগ করতে পারেন। কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান ও অফিসের জন্য রয়েছে প্রশিক্ষণ কক্ষ, কনফারেন্স রুম এবং সভাকক্ষ, যেখানে একসাথে ৫০ থেকে ১৫০ জন পর্যন্ত অংশ নিতে পারে।
এছাড়া, গেট টুগেদার, ডিজে পার্টি কিংবা প্রাইভেট ইভেন্ট আয়োজনের জন্য আলাদা প্যাকেজও রয়েছে।
রুমের ভাড়া (Room Tariff)
রুমের ধরন | মূল্য (টাকা) |
---|---|
AC Deluxe Single | ৪,০০০ |
AC Super Deluxe Single | ৪,৭৫০ |
AC Deluxe Double | ৫,২৫০ |
AC Premier Single | ৫,২৫০ |
AC Super Deluxe Double | ৫,৬২৫ |
AC Premier Double | ৬,০০০ |
AC Premier (For 3 Person) | ৬,৭৫০ |
3 Bed Premiere Cottage (AC) | ১৫,০০০ |
4 Bed Premiere Cottage (AC) | ১৬,৮৭৫ |
যোগাযোগের তথ্য
ঢাকা অফিস:
বাড়ি-৫১৭, লেন-১০, বারিধারা ডিওএইচএস
01713381012
রিসোর্ট ঠিকানা:
এলেঙ্গা, কালিহাতী, টাঙ্গাইল
+8801819410062
[email protected]
Facebook Page – Elenga Resort
কেন এলেঙ্গা রিসোর্টে যাবেন?
- প্রকৃতির কাছাকাছি থেকে কিছুটা নিরিবিলি সময় কাটাতে
- পরিবার ও বন্ধুদের নিয়ে মিনি ভ্যাকেশন কিংবা পিকনিক করতে
- অফিসিয়াল মিটিং, সেমিনার, বা গেট টুগেদার আয়োজনে
- স্পোর্টস, সুইমিং ও অন্যান্য রিক্রিয়েশনাল কার্যক্রমে অংশ নিতে
- দাম্পত্য বা হানিমুনের জন্য নিরিবিলি ও অভিজাত পরিবেশ পছন্দ করলে
বঙ্গবন্ধু সেতু রিসোর্ট
যমুনা নদীর পূর্ব তীরে, বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতুর ঠিক পাশেই অবস্থিত বঙ্গবন্ধু সেতু রিসোর্ট (Bangabandhu Setu Resort) একটি জনপ্রিয় অবকাশ যাপন কেন্দ্র। আগে যেটি যমুনা রিসোর্ট (Jamuna Resort) নামে পরিচিত ছিল, এখন এটি নতুন নামে, নতুন রূপে এবং আরও উন্নত সুবিধা নিয়ে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের স্বাগত জানাচ্ছে।
ঢাকা থেকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই রিসোর্টটি টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ জেলার মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত হওয়ায় ভৌগলিকভাবে সহজে পৌঁছানো যায়। বঙ্গবন্ধু সেতুর নিকটবর্তী হওয়ায় এটি উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গের পর্যটকদের কাছে সমান জনপ্রিয়।
রিসোর্টের পরিবেশ ও সৌন্দর্য
যমুনার বিশাল বিস্তীর্ণ পাড়ঘেঁষা এই রিসোর্টে রয়েছে মুক্ত প্রকৃতি, হালকা বাতাস, নদীর ছলা ছলা শব্দ আর সবুজে মোড়া চারপাশ। পরিবার বা বন্ধুদের নিয়ে একান্ত সময় কাটাতে বা কর্মজীবনের চাপ থেকে মুক্তি পেতে এর চেয়ে সুন্দর স্থান আর হতে পারে না।
আধুনিক সুযোগ-সুবিধা
বঙ্গবন্ধু সেতু রিসোর্টে অতিথিদের জন্য আধুনিক সব সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। এখানে রয়েছে:
- সুইমিংপুল: পরিষ্কার ও নিরাপদ
- হেলথ ক্লাব ও জিম: স্বাস্থ্য সচেতনদের জন্য আদর্শ
- স্যুভেনির শপ: ঘুরে দেখার স্মৃতি রক্ষার জন্য
- বেকারি: হালকা খাবার ও মিষ্টিজাত দ্রব্য
- ফরেন মানি এক্সচেঞ্জ: বিদেশি পর্যটকদের জন্য প্রয়োজনীয় সুবিধা
এছাড়া রিসোর্টের খেলার মাঠে রয়েছে:
- ফুটবল
- ক্রিকেট
- হকি
- ব্যাডমিন্টন
- দাবা
সব বয়সের অতিথিদের বিনোদন নিশ্চিত করতে পরিকল্পিত এই রিসোর্টটি একসাথে পরিবার, বন্ধু এবং কর্পোরেট গ্রুপের জন্য উপযুক্ত।
থাকার ব্যবস্থা
বঙ্গবন্ধু সেতু রিসোর্টে বিভিন্ন ক্যাটাগরির আবাসন ব্যবস্থা রয়েছে, যা পর্যটকদের বাজেট ও চাহিদা অনুযায়ী বেছে নেওয়ার সুযোগ দেয়:
রুমের ধরন | ভাড়া (টাকা) |
---|---|
2 বেডরুম কটেজ | ১,৫০০ |
3 বেডরুম কটেজ | ২,০০০ |
ডিলাক্স এক্সিকিউটিভ স্যুইট | ৩,৫০০ |
ডরমিটরি | ৪,০০০ |
রয়েল স্যুইট | ৫,০০০ |
পারফেক্ট ফর:
- পরিবার নিয়ে অবকাশ কাটানো
- অফিসিয়াল রিট্রিট বা ট্রেনিং প্রোগ্রাম
- বন্ধুবান্ধবের গেট টুগেদার
- নদীভ্রমণ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ
- স্বল্প বাজেটের ট্যুরে মানসম্মত থাকার ব্যবস্থা
যোগাযোগের তথ্য
কর্পোরেট অফিস:
প্রগতি ইন্স্যুরেন্স ভবন (৭ম তলা)
২০-২১, কাওরান বাজার, ঢাকা ১২১৫
01715-852997, 01975-852997
হোটেল প্রিন্স
টাঙ্গাইল শহরের কেন্দ্রস্থলে, ভিক্টোরিয়া রোডে অবস্থিত হোটেল প্রিন্স (Hotel Prince), স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যটকদের জন্য একটি বিশ্বস্ত ও স্বস্তিদায়ক আবাসন কেন্দ্র হিসেবে সুপরিচিত। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা ও পেশাদার সেবার সমন্বয়ে গড়ে উঠা এই হোটেলটি দীর্ঘদিন ধরে মানসম্মত হসপিটালিটি সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
যারা শহরের কেন্দ্রস্থলে নিরাপদ, পরিচ্ছন্ন এবং আরামদায়ক থাকার জায়গা খুঁজছেন, তাদের জন্য হোটেল প্রিন্স হতে পারে প্রথম পছন্দ।
অবস্থান ও সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা
হোটেলটি টাঙ্গাইল শহরের একেবারে প্রাণকেন্দ্র—ভিক্টোরিয়া রোডে অবস্থিত, যা শহরের যেকোনো প্রান্ত থেকে সহজেই পৌঁছানো যায়। শহরের বাজার, হাসপাতাল, ব্যাংক, রেলস্টেশন এবং বাসস্ট্যান্ড থেকে অল্প সময়েই এই হোটেলে যাওয়া যায়। ব্যবসায়িক কাজ বা দ্রুত ভ্রমণের জন্য যারা শহরে অবস্থান করছেন, তাদের জন্য এই হোটেলের লোকেশন অত্যন্ত উপযোগী।
রুমের ধরন ও ভাড়া
হোটেল প্রিন্সে বিভিন্ন চাহিদা ও বাজেট অনুযায়ী রুমের অপশন রয়েছে। একক ভ্রমণকারী থেকে শুরু করে পরিবার বা কর্পোরেট অতিথিদের জন্যও এখানে রয়েছে নানা সুবিধা ও পছন্দমতো রুম।
রুমের ধরন | ভাড়া (টাকা) |
---|---|
সিঙ্গেল নন-এসি | ৮০০ |
সিঙ্গেল ডাবল নন-এসি | ১,১০০ |
সিঙ্গেল এসি | ১,৪০০ |
সিঙ্গেল ডাবল এসি | ১,৮০০ |
ডিলাক্স রুম | ২,০০০ |
রয়্যাল স্যুইট | ৪,৫০০ |
টিপস: কম বাজেটে ভালো থাকার ব্যবস্থা চাইলে নন-এসি রুম একটি ভালো অপশন। আর যদি আপনি বাড়তি আরাম ও গোপনীয়তা চান, তবে রয়্যাল স্যুইট বা ডিলাক্স রুম আপনার জন্য উপযুক্ত।
সুবিধাসমূহ
হোটেল প্রিন্সে আপনি পাবেন সকল আধুনিক সুবিধা, যেমন:
- ২৪ ঘণ্টা রুম সার্ভিস
- ফ্রি ওয়াই-ফাই
- নিরাপত্তা ব্যবস্থা (সিসিটিভি মনিটরিং)
- প্রতিদিনের হাউসকিপিং
- জরুরি পাওয়ার ব্যাকআপ
- হট ও কোল্ড ওয়াটার সাপ্লাই
- ইন-হাউস রেস্টুরেন্ট (নির্বাচিত সময়)
- কর্পোরেট গেস্টদের জন্য বিজনেস-ফ্রেন্ডলি পরিবেশ
উপযুক্ত কার জন্য?
- ব্যবসায়ী ও অফিসিয়াল সফরকারীদের জন্য
- পরীক্ষার্থী বা স্বল্প সময়ের ছাত্রছাত্রীদের জন্য
- ট্রাভেল গ্রুপ বা ট্যুরিস্টদের জন্য
- পরিবার নিয়ে রাত্রী যাপন করতে ইচ্ছুক পর্যটকদের জন্য
যোগাযোগের ঠিকানা
হোটেল প্রিন্স
এফ আর খান প্রিন্স প্লাজা, ভিক্টোরিয়া রোড, টাঙ্গাইল
মোবাইল: 0921-63434, 01719-629488
ই-মেইল: [email protected]
হোটেল সাগর
টাঙ্গাইল শহরে যারা সীমিত বাজেটে নিরাপদ, পরিচ্ছন্ন ও আরামদায়ক হোটেল খুঁজছেন, তাদের জন্য হোটেল সাগর (Hotel Sagar) হতে পারে উপযুক্ত একটি পছন্দ। শহরের প্রাণকেন্দ্র শহীদ জগ্লু রোডে অবস্থিত এই হোটেলটি স্থানীয় ভ্রমণকারী, শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী বা অল্প সময়ের পর্যটকদের জন্য অন্যতম নির্ভরযোগ্য আবাসন ব্যবস্থা।
অবস্থান
শহীদ জগ্লু রোড, টাঙ্গাইল শহরের অন্যতম পরিচিত একটি এলাকা। এখান থেকে সহজেই শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান যেমন: হাসপাতাল, শপিং সেন্টার, বাসস্ট্যান্ড বা রেলস্টেশনে যাওয়া যায়। পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সহজলভ্য হওয়ায় হোটেলটি বিশেষ করে যাত্রীদের জন্য খুবই সুবিধাজনক।
রুমের ধরন ও ভাড়া
হোটেল সাগরে বিভিন্ন ধরণের রুম রয়েছে, যা আপনার প্রয়োজন ও বাজেট অনুযায়ী নির্বাচন করা সম্ভব:
রুমের ধরন | ভাড়া (টাকা) |
---|---|
সিঙ্গেল রুম | ৭০০ |
ডাবল রুম | ১,০০০ |
সিঙ্গেল এসি | ১,২০০ |
ডাবল এসি | ১,৮০০ |
সুবিধাসমূহ
যদিও হোটেলটি বিলাসবহুল নয়, তবে প্রয়োজনীয় সকল মৌলিক সুবিধা এখানে রয়েছে:
- পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি রুম
- নিরাপত্তা ব্যবস্থা
- প্রতিদিনের হাউসকিপিং
- প্রাথমিক স্বাস্থ্য সহায়তা
- শান্ত পরিবেশ
- ২৪ ঘণ্টা রিসিপশন সাপোর্ট
এটি একটি সাধারন বাজেট হোটেল, তাই যারা শুধু রাত্রি যাপন ও বিশ্রামের জন্য হোটেল খোঁজেন, তাদের জন্য এটি যথেষ্ট উপযুক্ত।
কারা থাকবেন এখানে?
- শিক্ষার্থী ও পরীক্ষার্থীরা
- একক ভ্রমণকারী বা ব্যাকপ্যাকার
- অল্প খরচে ট্রাভেল করতে ইচ্ছুক পর্যটক
- ব্যবসায়িক সফরে আসা কর্মজীবী
- যাত্রী বিশ্রামের জন্য এক রাতের থাকার প্রয়োজন যাদের
যোগাযোগের ঠিকানা
হোটেল সাগর
শহীদ জগ্লু রোড, টাঙ্গাইল
মোবাইল: 0921-64308
ওয়াটার গার্ডেন রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা
নগর জীবনের ব্যস্ততা, ক্লান্তি আর কোলাহল থেকে একটু দূরে, এক টুকরো প্রশান্তি খুঁজে নিতে চাইলে আপনার গন্তব্য হতে পারে ওয়াটার গার্ডেন রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা। এটি টাঙ্গাইল জেলার বাসাইল উপজেলার দাপনাজোর গ্রামে অবস্থিত একটি বিলাসবহুল পাঁচ তারকা মানের রিসোর্ট।
শুধু অবস্থান নয়, পরিবেশ, সেবা, এবং সুবিধার দিক থেকেও এটি দেশের অন্যতম মানসম্পন্ন রিসোর্টগুলোর একটি।
অবস্থান ও যাতায়াত সুবিধা
রিসোর্টটি ঢাকার কেন্দ্র থেকে মাত্র ৯০ কিলোমিটার দূরে। আশুলিয়া থেকে ৬৫ কিলোমিটার এবং ঢাকা ইপিজেড (Export Processing Zone) থেকে প্রায় ৫৫ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত।
ঢাকা-টাঙ্গাইল ছয় লেনের এক্সপ্রেসওয়ে থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার দূরত্বে হওয়ায় যাতায়াত অত্যন্ত সহজ ও আরামদায়ক।
চাইলে আপনি ব্যক্তিগত গাড়ি, মাইক্রোবাস অথবা রিসোর্ট থেকে সংগঠিত পরিবহন ব্যবস্থার মাধ্যমেও পৌঁছাতে পারেন।
রিসোর্টের বৈশিষ্ট্য ও পরিবেশ
ওয়াটার গার্ডেন রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা প্রাকৃতিক পরিবেশের মাঝে নির্মিত এমন এক আবাসন যা অতিথিদের জন্য এনে দেয় একান্ত আরাম ও বিশ্রামের অনুভূতি।
রিসোর্টটির চারপাশে সবুজ বনানী, জলাধার, ল্যান্ডস্কেপড গার্ডেন এবং আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর সমন্বয় যে কাউকে মুগ্ধ করে।
রিসোর্টটি নির্মাণে সর্বোচ্চ মান বজায় রাখা হয়েছে, যাতে পরিবার, দম্পতি, কর্পোরেট গ্রুপ কিংবা হানিমুন কাপল সবাই এখানে স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে পারেন।
রুমের ধরন ও প্যাকেজ সমূহ
রিসোর্টে তিন ধরনের রুম রয়েছে – স্ট্যান্ডার্ড, ডিলাক্স ও ফ্যামিলি রুম। প্রতিটি রুমেই রয়েছে আধুনিক সুবিধা, রুচিশীল সাজসজ্জা ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তার নিশ্চয়তা।
রুম ভাড়া তালিকা:
রুমের ধরন | ভাড়া (টাকা) |
---|---|
স্ট্যান্ডার্ড রুম | ১৩,০০০ |
ডিলাক্স রুম | ১৪,০০০ |
ফ্যামিলি রুম | ১৬,০০০ |
ডে-প্যাকেজ (কাপল) | ৬,০০০ |
নাইট স্টে কাপল প্যাকেজ | ৮,৫০০ – ৯,৫০০ |
ডে প্যাকেজে থাকছে রিসোর্ট পরিদর্শন, লাঞ্চ, সাঁতার কাটা, গেমস রুম ব্যবহার ইত্যাদি।
নাইট প্যাকেজে থাকছে হোটেল রুম, ডিনার ও ব্রেকফাস্টসহ বিভিন্ন সুযোগ।
বিলাসবহুল সুযোগ-সুবিধাসমূহ
- সুইমিং পুল
- স্পা ও থাই ম্যাসাজ
- রেস্টুরেন্ট ও কফিশপ
- গার্ডেন ক্যাফে
- কিডস কর্নার
- কর্পোরেট মিটিং রুম
- ওয়াই-ফাই, জেনারেটর ব্যাকআপ
- নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও সার্বক্ষণিক কেয়ারটেকার
উপযুক্ত কার জন্য?
- হানিমুন কাপল: প্রাইভেসি এবং রোমান্টিক পরিবেশ খোঁজেন যাঁরা
- ফ্যামিলি ট্যুর: শিশু-বান্ধব ও নিরাপদ পরিবেশ
- কর্পোরেট টিম: রিট্রিট, ওয়ার্কশপ ও মিটিং আয়োজন
- ডে আউট গ্রুপ: বন্ধুবান্ধব বা পারিবারিক দিনব্যাপী আয়োজন
যোগাযোগের তথ্য
ঢাকা অফিস:
বাড়ি #03, সড়ক #05, ব্লক-D
নিকেতন, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২
01844611595, 01844611599
Email: [email protected]
রিসোর্ট ঠিকানা:
দাপনাজোর, বাসাইল উপজেলা, টাঙ্গাইল
01844611590
Email: [email protected]
উপসংহার
টাঙ্গাইল জেলা শুধু ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির জন্যই বিখ্যাত নয়, বরং এর পর্যটন সম্ভাবনাও দিন দিন বাড়ছে। যেকোনো ভ্রমণ সফল করতে হলে মানসম্মত ও আরামদায়ক থাকার ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সে বিবেচনায় টাঙ্গাইলে গড়ে উঠেছে নানা ধরনের হোটেল ও রিসোর্ট—বিলাসবহুল রিসোর্ট থেকে শুরু করে সাশ্রয়ী হোটেল পর্যন্ত।
ওয়াটার গার্ডেন রিসোর্ট ও এলেঙ্গা রিসোর্ট আপনাকে দিবে প্রাকৃতিক পরিবেশে প্রিমিয়াম অভিজ্ঞতা, যেখানে রয়েছে আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা। অন্যদিকে, বঙ্গবন্ধু সেতু রিসোর্ট নদী ও সেতুর পাশের নৈসর্গিক পরিবেশে আপনাকে দেবে পরিবার ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে ছুটি কাটানোর এক অনন্য সুযোগ।
আর যদি আপনি শহরের ভেতরে থাকতে চান, তাহলে হোটেল প্রিন্স ও হোটেল সাগর—দুটি সাশ্রয়ী ও নির্ভরযোগ্য অপশন, যাদের পরিষেবা ও অবস্থান শহুরে ভ্রমণকারীদের জন্য অত্যন্ত উপযোগী।
মন্তব্য