বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের সমাধি

বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ১৯৪১ সালের ২৯ অক্টোবর পুরান ঢাকার মোবারক লজে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃক বাড়ি নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার রামনগর গ্রামে, যা বর্তমানে মতিনগর নামে পরিচিত। পরিবারের ৯ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন ষষ্ঠ সন্তান। তাঁর পিতার নাম মৌলভী আবদুস সামাদ এবং মাতার নাম সৈয়দা মোবারকুন্নেসা খাতুন।

শিক্ষাজীবনে মতিউর রহমান ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে পঞ্চম শ্রেণী পাস করার পর পাকিস্তান বিমান বাহিনী পাবলিক স্কুল থেকে মেট্রিক পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে ডিস্টিংকশনসহ উত্তীর্ণ হন। ১৯৬৩ সালে তিনি রিসালপুরের পিএএফ কলেজ থেকে পাইলট অফিসার হিসেবে কমিশন লাভ করেন এবং করাচির মৌরিপুর এয়ার বেজের ২ নম্বর স্কোয়াড্রনে জেনারেল ডিউটি পাইলট হিসেবে দায়িত্ব পান। পরবর্তীতে তিনি পেশোয়ারে বদলি হন এবং ১৯৬৭ সালে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট পদে পদোন্নতি পান। ১৯৭০ সালে তাকে জেট ফ্লাইং ইনস্ট্রাক্টর নিযুক্ত করা হয়।

১৯৭১ সালের জানুয়ারিতে মতিউর রহমান সপরিবারে ঢাকায় ছুটিতে আসেন। ২৫ মার্চের পর মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি ভৈরবে একটি ট্রেনিং ক্যাম্প প্রতিষ্ঠা করে বাঙালি যুবকদের সামরিক প্রশিক্ষণ দেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে প্রতিরোধ বাহিনী গড়ে তোলেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ভৈরব আক্রমণ করলে তিনি বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও ইপিআর সদস্যদের সঙ্গে সাহসিকতার সাথে যুদ্ধ করেন।

২৩ এপ্রিল ঢাকা সফরের পর ৯ মে তিনি পরিবারসহ করাচি ফিরে যান এবং একটি যুদ্ধবিমান দখল করে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা করেন। ২০ আগস্ট, তিনি একটি টি-৩৩ প্রশিক্ষণ বিমান ছিনতাই করে ভারতের দিকে উড়াল দেন, কিন্তু ভারতীয় সীমান্ত থেকে মাত্র ৩৫ মাইল দূরে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। প্যারাশুট না থাকায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ঘটনাস্থল থেকে প্রায় আধ মাইল দূরে তাঁর মৃতদেহ পাওয়া যায়।

পাকিস্তান সরকার করাচির মাসরুর বিমান ঘাটির চতুর্থ শ্রেণীর কবরস্থানে তাঁকে সমাহিত করে। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর, ২০০৬ সালের ২৪ জুন, তাঁর দেহাবশেষ বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয় এবং পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে পুনঃসমাহিত করা হয়।

মতিউর রহমানের আত্মত্যাগ বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। তাঁর নামে বিমান বাহিনীর একটি ঘাঁটি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নামকরণ করা হয়েছে, যা তাঁর স্মৃতিকে অম্লান রাখে।

কিভাবে যাবেন

আপনি রাজধানী ঢাকার যেকোনো স্থান থেকে নিজস্ব যানবাহন অথবা মিরপুরগামী বাসে করে মিরপুর ১-এর মাজার রোডে অবস্থিত শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে পৌঁছাতে পারবেন। সেখানে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের সমাধি অবস্থিত।

বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের সমাধি এর দূরত্ব
ঢাকা থেকে দূরত্ব:
153.76 কিমি
ঢাকা থেকে
154.15 কিমি
Rate this Post
4.8
Average Rating
76
Total Votes
Poor Excellent
Comments (0)
এখনো কোনো মন্তব্য নেই

প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!

আপনার মন্তব্য লিখুন
নিকটবর্তী দর্শনীয় স্থান
মালঞ্চ মসজিদ
শাহ জামালের মাজার
মহাস্থানগড়
পরশুরামের প্রাসাদ
মানকালীর কুণ্ড
দয়াময়ী মন্দির
গোকুল মেধ
লুইস ভিলেজ রিসোর্ট এন্ড পার্ক
ভীমের জাঙ্গাল
মিয়াবাড়ি জামে মসজিদ
বালাসী ঘাট
এসকেএস ইন রিসোর্ট
ভাসু বিহার
বিহার ধাপ
ফ্রেন্ডশিপ সেন্টার
মাইসাহেবা জামে মসজিদ
পৌনে তিন আনী জমিদার বাড়ি
গাইবান্ধা পৌর পার্ক
যোগীর ভবণ
আটকান্দি মসজিদ