নেত্রকোণা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত ডিঙ্গাপোতা হাওর দেশের বৃহত্তম হাওরগুলোর একটি। ঋতুভেদে এই হাওরের সৌন্দর্য নতুন রূপে ধরা দেয়। বর্ষাকালে জলমগ্ন বিশাল হাওরের ঢেউ আর শুষ্ক মৌসুমে চারপাশের সবুজ প্রকৃতি প্রকৃতিপ্রেমীদের মুগ্ধ করে। সারা বছরই হাওরের মাঝখানে আধডোবা হিজল গাছ, জলরাশির ছলাৎ ছলাৎ ধ্বনি আর নীল আকাশের মিতালি এক অনন্য দৃশ্যের সৃষ্টি করে। বিশেষ করে শরৎ ও হেমন্তে, হাওরের দু’পাশের সোনালি ধানক্ষেত আর নীলচে আকাশ দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ করে।
জীবনযাত্রা ও স্থানীয় অভিজ্ঞতা
মাছ ধরার মৌসুমে হাওরের পাড়ে জেলেদের অস্থায়ী বসতি গড়ে ওঠে। সেখানে ঘুরে জেলেদের জীবনযাত্রা দেখা যায়, চাইলে হাওর থেকে তাজা মাছ কিনে নেওয়ার সুযোগও আছে। প্রকৃতির অপার দানে সমৃদ্ধ ডিঙ্গাপোতা হাওর নেত্রকোনার পর্যটনে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে।
যাওয়ার উপায়
ঢাকার মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে সরাসরি বাসে নেত্রকোনা পৌঁছানো যায়। রেলপথে কমলাপুর থেকে হাওর এক্সপ্রেস বা মোহনগঞ্জ ট্রেনে মোহনগঞ্জ পৌঁছাতে পারেন। সেখান থেকে অটো বা লেগুনায় তেতুলিয়া ঘাটে গিয়ে ট্রলারে চেপে সহজেই ডিঙ্গাপোতা হাওর ঘোরা যায়।
থাকার ব্যবস্থা
মোহনগঞ্জে হাওর ইন, হোটেল শাপলা-সহ বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেল রয়েছে। এছাড়া বিরিশিরি বা দূর্গাপুরে হোটেল আল নুর, সৌরভ হোটেল, হোটেল চন্দন, হোটেল নিরালা ও হোটেল মদিনায় রাতযাপন করতে পারেন।
খাওয়ার ব্যবস্থা
ট্রলার রিজার্ভ নিলে মাঝির সঙ্গে কথা বলে রান্নার ব্যবস্থা করা যায়। এছাড়া মোহনগঞ্জের হাওর ইনে স্থানীয় খাবারের স্বাদ নিতে পারেন। আর নেত্রকোনায় গেলে বিখ্যাত বালিশ মিষ্টি না খেয়ে ফিরবেন না যেন!
দর্শনীয় স্থান
ডিঙ্গাপোতা হাওর ছাড়াও নেত্রকোনায় ঘুরে দেখতে পারেন কমলারাণী দীঘি, সাত শহীদের মাজার, সোমেশ্বরী নদী, বিরিশিরি, আর মনোমুগ্ধকর চিনামাটির পাহাড়।
এই অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও স্থানীয় সংস্কৃতি একসঙ্গে উপভোগ করতে ডিঙ্গাপোতা হাওর হতে পারে আপনার পরবর্তী ভ্রমণের গন্তব্য!
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!