ইটনা শাহী মসজিদ (Itna Shahi Masjid) কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলায় অবস্থিত। মোগল স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত এই মসজিদটি একটি বেদির উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। চারপাশে মোটা দেয়াল দ্বারা পরিবেষ্টিত মসজিদের দুটি তোরণ এবং ছাদে তিনটি সুদৃশ্য গম্বুজ রয়েছে। মসজিদের মূল কাঠামোর সাথে সামঞ্জস্য রেখে এটি স্থানীয়ভাবে কয়েকবার সংস্কার করা হয়েছে। তবে কিছুটা অপরিকল্পিত মেরামতের ফলে মসজিদের গায়ে থাকা শিলালিপি সিমেন্টের প্রলেপের নিচে ঢাকা পড়ে গেছে। ইতিহাস থেকে জানা যায়, প্রায় ৪২৫ বছর আগে বারো ভূইয়ার প্রধান ঈসা খাঁর সভাসদ মজলিশ দেলোয়ার এই মসজিদটি নির্মাণ করেন।
স্থানীয়রা এই মসজিদটি নিয়ে দুটি মত পোষণ করেন। কেউ এটিকে গায়েবী মসজিদ বলে থাকেন, আবার অনেকে বলেন এটি তিন গম্বুজ মসজিদ।
ইটনা শাহী মসজিদ ছাড়াও অন্যান্য দর্শনীয় স্থান: ইটনার হাওরে নৌকা ভাড়া করে ঘুরে দেখতে পারেন, যেখানে জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য এবং নানা প্রজাতির পাখি দেখতে পাওয়া যায়। হাওরের মাঝখানে ছোট ছোট ডিবির ওপর তৈরি বসতবাড়ি দেখে অবাক হবেন।
ধনপুর ইউনিয়নের কাঠইর গ্রামে রয়েছে জমিদার গুরুদয়াল সরকারের বাড়ি। কিশোরগঞ্জ জেলার ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠা গুরুদয়াল সরকারী কলেজও তার জমিতে প্রতিষ্ঠিত। ইটনার জয়সিদ্ধিতে আনন্দ মোহন কলেজের প্রতিষ্ঠাতা আনন্দ মোহন বসুর বাড়ি রয়েছে। বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু ছিলেন আনন্দ মোহন বসুর মামা।
ইটনা শাহী মসজিদে যেভাবে যাবেন
গায়েবী মসজিদ দেখতে হলে প্রথমে কিশোরগঞ্জ জেলা সদরে আসতে হবে। ঢাকা থেকে ট্রেন বা বাসে কিশোরগঞ্জ যাওয়া যাবে।
ঢাকা থেকে ট্রেনে কিশোরগঞ্জ
কমলাপুর বা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে সকাল ৭:১৫ মিনিটে এগারোসিন্ধুর ট্রেনে চড়ে দুপুর ১১ টার মধ্যে কিশোরগঞ্জ পৌঁছানো যাবে। ট্রেনের টিকিটের দাম শ্রেণীভেদে ১৩৫ টাকা থেকে ৩৬৮ টাকা। এরপর ইজিবাইক নিয়ে মাত্র ৫ টাকায় বা ৫ মিনিট হাঁটলে শহরের একরামপুর মোড়ে পৌঁছানো যাবে।
ঢাকা থেকে বাসে কিশোরগঞ্জ
মহাখালী বা গোলাপবাগ বাস স্ট্যান্ড থেকে কিশোরগঞ্জগামী যেকোনো বাসে করে কিশোরগঞ্জের গাইটাল বাস স্ট্যান্ডে পৌঁছাতে হবে। তারপর ইজিবাইক নিয়ে শহরের একরামপুর মোড়ে আসতে হবে, যার ভাড়া ১৫ টাকা। রিকশায় ভাড়া হবে ৩০ টাকা।
একরামপুর মোড় থেকে সিএনজি বা মহেন্দ্রতে চড়ে ৪০-৫০ টাকা ভাড়ায় চামটাঘাট আসতে হবে। একরামপুর থেকে চামটাঘাটের দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। চামটাঘাট থেকে ট্রলারে করে ইটনা যেতে পারবেন, ভাড়া ৫০ টাকা এবং সময় প্রায় দুই ঘণ্টা। ইটনা ঘাট থেকে বড়হাটি ইটনা শাহী মসজিদে রিকশা বা পায়ে হেঁটে যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন
ইটনায় পর্যটকদের জন্য তেমন কোনো উন্নত আবাসন ব্যবস্থা নেই, তবে সম্প্রতি কিছু সাধারণ মানের হোটেল তৈরি হয়েছে। ভালো মানের হোটেলে থাকার জন্য কিশোরগঞ্জ ফিরে আসতে হবে। চামটাঘাট থেকে সারাদিনের জন্য নৌকা রিজার্ভ করলে সব দর্শনীয় স্থান একদিনেই ঘুরে দেখতে পারবেন। নৌকার ভাড়া সাইজ অনুসারে ৩০০০ থেকে ৫০০০ টাকা। কিশোরগঞ্জ শহরে বিভিন্ন মানের হোটেল রয়েছে, যেমন গাংচিল, ক্যাসেল সালাম, রিভারভিউ, উজান ভাটি।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!