কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের বুক চিরে বয়ে যাওয়া নরসুন্দা নদীর কেন্দ্রবিন্দুতে গড়ে তোলা হয়েছে নরসুন্দা লেকসিটি (Narashunda Lake City)। এক সময়ের খরস্রোতা এই নদী কিশোরগঞ্জ শহরের প্রাণ এবং ইতিহাসের নীরব সাক্ষী। এই নদীকে নতুন জীবন দিতে এবং শহরবাসীর জীবনমান উন্নত করতে নরসুন্দা লেকসিটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। প্রকল্পের অংশ হিসেবে শহরের বিভিন্ন জায়গায় নির্মিত হয়েছে ৫টি দৃষ্টিনন্দন সেতু ও ২টি ফুটওভার ব্রিজ। নদীর দুই পাড়ে তৈরি করা হয়েছে প্রশস্ত ওয়াকওয়ে, যা স্থানীয়দের জন্য হাঁটাহাঁটির পাশাপাশি সৌন্দর্য উপভোগের সুযোগ করে দিয়েছে।
মূল আকর্ষণ
গুরুদয়াল সরকারি কলেজের সামনে অবস্থিত মুক্তমঞ্চ (MuktoMoncho) এবং ওয়াচ টাওয়ার লেকসিটির প্রধান আকর্ষণ। এটি সবসময় ভিড় জমে থাকে ভ্রমণ ও বিনোদনপ্রেমীদের পদচারণায়। মুক্তমঞ্চের আশপাশে রয়েছে নানা ধরনের খাবারের দোকান ও চা স্টল। বিনোদনের জন্য আসা দর্শনার্থীরা চাইলে গুরুদয়াল কলেজ মাঠে ঘোড়ার গাড়িতে ঘুরতে বা নরসুন্দা নদীতে নৌকা ভ্রমণের মাধ্যমে সময় উপভোগ করতে পারেন। এছাড়া ওয়াচ টাওয়ারে উঠে এক নজরে কিশোরগঞ্জ শহরের সৌন্দর্য দেখতে পারবেন।
কিভাবে যাবেন?
কিশোরগঞ্জ শহরে আসার পথ
ঢাকা থেকে ট্রেনে:
- কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে কিশোরগঞ্জে যাওয়ার ৩টি আন্তঃনগর ট্রেন রয়েছে।
- সকালের এগারোসিন্ধুর প্রভাতী ট্রেন নিলে হাতে বেশি সময় পাবেন।
- ভাড়া: ১৩৫-৩৬৮ টাকা (শ্রেণীভেদে)
- সময়: প্রায় ৪ ঘণ্টা
- কিশোরগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে অটোরিকশায় মুক্তমঞ্চ যেতে খরচ পড়বে ৫০-৭০ টাকা।
ঢাকা থেকে বাসে:
- ঢাকার মহাখালী থেকে অনন্যা পরিবহণ, অনন্যা ক্লাসিক বা গোলাপবাগ থেকে অনন্যা সুপার বাসে যাওয়া যায়।
- ভাড়া: ২৭০-৩৫০ টাকা
- সময়: মহাখালী থেকে ৩.৫ ঘণ্টা এবং গোলাপবাগ থেকে প্রায় ৪ ঘণ্টা।
- বাস স্ট্যান্ড থেকে অটো রিকশায় মুক্তমঞ্চ সরাসরি যাওয়া যাবে।
খাবারের জায়গা
কিশোরগঞ্জ শহরে বিভিন্ন মানসম্মত রেস্টুরেন্ট রয়েছে, যেমন:
- গাংচিল, তাজ, স্টার ওয়ান, ধানসিঁড়ি, ইস্টিকুটুম, দারুচিনি, মাছরাঙ্গা।
মিষ্টি প্রেমীদের জন্য: - লক্ষ্মী নারায়ণ মিষ্টান্ন ভান্ডার (একরামপুর) এবং
- মদন গোপাল (গৌরাঙ্গবাজার)।
থাকার জায়গা
কিশোরগঞ্জ শহরে রাত যাপনের জন্য রয়েছে বেশ কিছু ভালো মানের হোটেল:
- হোটেল শেরাটন, রিভার ভিউ, গাংচিল, নিরালা, উজান ভাটি, ক্যাসেল সালাম।
সরকারি ডাকবাংলোতে থাকার জন্য অনুমতি প্রয়োজন।
অন্যান্য দর্শনীয় স্থান
কিশোরগঞ্জ ভ্রমণে আরও দেখতে পারেন:
- পাগলা মসজিদ
- শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান
- কবি চন্দ্রাবতীর মন্দির
- গাঙ্গাটিয়া জমিদার বাড়ি
- ঈশা খাঁর জঙ্গলবাড়ি দূর্গ
- বালিখলা, মিঠামইন হাওর ও নিকলী হাওর।
এখনো কোনো মন্তব্য নেই
প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!