চেরাগি পাহাড়

চট্টগ্রাম জেলার শিল্প, সংস্কৃতি এবং সাহিত্যচর্চার কেন্দ্র হিসেবে চেরাগি পাহাড় (Cheragi Pahar) একটি পরিচিত স্থান। ডিসি হিল (বর্তমানে নজরুল স্কয়ার) সংলগ্ন মোমিন রোড এবং জামাল খান রোডের সংযোগস্থলে চেরাগি পাহাড় চত্বর (Cheragi Square) অবস্থিত। চেরাগি মোড় নামে পরিচিত এই জায়গাটি প্রতিদিন কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী, সংবাদকর্মী, পাঠক, সংগঠক, রাজনৈতিক কর্মী সহ নানা শ্রেণীর সৃজনশীল মানুষের উপস্থিতিতে চাঙ্গা হয়ে ওঠে।

প্রচলিত কাহিনী অনুসারে, সুফি সাধক হযরত বদর আউলিয়া (র.) ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে আরব থেকে সমুদ্রে ভাসমান একটি পাথরে চড়ে চট্টগ্রামে আগমন করেন। তিনি একটি অলৌকিক চেরাগ হাতে নিয়ে একটি জনশূন্য পাহাড়ে উঠে, কিন্তু জ্বীন-পরীরা তাকে বাধা দেয়। তবে, হযরত বদর আউলিয়া (র.) জ্বীন-পরীদের থেকে শুধু তার চেরাগের বিনিময়ে পাহাড় ত্যাগ করার প্রস্তাব গ্রহণ করেন। তার অলৌকিক চেরাগের তীব্র আলো জ্বীন-পরীরা সহ্য করতে না পেরে চট্টগ্রাম ছেড়ে চলে যায়। এরপর ধীরে ধীরে এখানে মানব বসতি গড়ে ওঠে এবং এই পাহাড়টি চেরাগি পাহাড় নামে পরিচিতি লাভ করে।

বর্তমানে চেরাগি পাহাড় নামে কোনো পাহাড় নেই, তবে এই স্থানটি কেন্দ্র করে অনেক ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। চেরাগি মোড়ে (তিন রাস্তার সংযোগস্থলে) একটি চেরাগ আকৃতির স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করা হয়েছে, যা বর্তমানে চেরাগি পাহাড় নামে পরিচিত।

কিভাবে যাবেন

চট্টগ্রাম শহরের আন্দরকিল্লা বাস স্টপের কাছে চেরাগি চত্বর অবস্থিত। চট্টগ্রাম শহরের যেকোনো স্থান থেকে বাস, সিএনজি বা রিকশা নিয়ে চেরাগি পাহাড় যাওয়া সম্ভব।

ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম

ঢাকার সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে সৌদিয়া, ইউনিক, টিআর ট্রাভেলস, গ্রিন লাইন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী, সোহাগ, এস. আলম, মডার্ন লাইন ইত্যাদি বিভিন্ন পরিবহনের এসি এবং নন-এসি বাসে চট্টগ্রাম যাওয়া যায়। এছাড়া ঢাকা থেকে ট্রেনে চট্টগ্রাম যেতে চাইলে কমলাপুর রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে পর্যটক এক্সপ্রেস, কক্সবাজার এক্সপ্রেস, সোনার বাংলা, সুবর্ণ এক্সপ্রেস, তূর্ণা-নিশীথা, মহানগর প্রভাতী/গোধূলী, চট্টগ্রাম মেইল ইত্যাদি ট্রেনে যাত্রা করা যায়।

কোথায় থাকবেন

চট্টগ্রাম শহরের ষ্টেশন রোড, জিইসি মোড় এবং আগ্রাবাদ এলাকায় বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। এর মধ্যে হোটেল স্টার পার্ক, হোটেল ডায়মন্ড পার্ক, হোটেল মিসখা, হোটেল হিলটন সিটি, এশিয়ান এসআর হোটেল, হোটেল প্যারামাউন্ট, হোটেল সাফিনা প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

কোথায় খাবেন

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী খাবারের জন্য হোটেল জামান বেশ সুনাম অর্জন করেছে। মেজবানি খাবারের জন্য চকবাজারের মেজবান হাইলে আইয়্যুন রেস্তোরাঁ জনপ্রিয়। এছাড়া চট্টগ্রাম শহরে অনেক ভালো মানের খাবার হোটেল ও রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এর মধ্যে বারকোড ক্যাফে, ক্যাফে ৮৮, গ্রিডি গাটস, সেভেন ডেইজ, গলফ গার্ডেন রেস্টুরেন্ট, কোস্টাল মারমেইড রেস্টুরেন্ট এন্ড লাউঞ্জ, বোনানজা পোর্ট রেস্টুরেন্ট প্রভৃতি অন্যতম।

চেরাগি পাহাড় এর দূরত্ব
ঢাকা থেকে দূরত্ব:
218.46 কিমি
চট্টগ্রাম থেকে
3.73 কিমি
নিকটবর্তী দর্শনীয় স্থান
নজরুল স্কয়ার
আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ
চট্টগ্রাম ওয়ার সিমেট্রি
বাটালি হিল
জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘর
জাম্বুরি পার্ক
স্বাধীনতা কমপ্লেক্স
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা
ফয়েজ লেক
বায়েজিদ বোস্তামীর মাজার
ডিসি পার্ক চট্টগ্রাম
খেজুরতলা বীচ
প্রজাপতি পার্ক
ভাটিয়ারী লেক
পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
চালন্দা গিরিপথ
পারকি সমুদ্র সৈকত
কুমিরা ঘাট, সীতাকুণ্ড
বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত

মন্তব্য

এখনো কোনো মন্তব্য নেই

প্রথম মন্তব্য করুন এবং আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন!

আপনার মন্তব্য লিখুন